রেলপথ ধরে বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে মাটি শক্ত করতে চাইছে বিজেপি। আর তা করতে গিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পদাঙ্ক অনুসরণ করছে মোদি সরকার। রেলমন্ত্রী থাকার সময়েই মমতা দেখিয়ে ছিলেন কীভাবে রাজ্যের উন্নতির জন্য কাজ করা যায়। সেই সময় তীব্র বিরোধিতা করেছিল গেরুয়া শিবির। অথচ এখন এই সুকান্ত মজুমদার-সহ বিজেপি সাংসদরা নিজের এলাকার জন্য নতুন ট্রেন বা স্টেশন চেয়ে পালে হাওয়া টানতে চাইছেন।
প্রথম বার অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল রেলমন্ত্রী ছিলেন মমতা। পরে মনমোহন সিংয়ের দ্বিতীয় মন্ত্রিসভাতেও রেল মন্ত্রক পেয়েছিলেন তিনি। ছিলেন ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত। মমতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়াক পরেও রেল মন্ত্রক ছিল তৃণমূলের হাতেই। প্রথমে দীনেশ ত্রিবেদী ও পরে মুকুল রায় রেলমন্ত্রী হন। মমতা বন্দ্যপাধ্যায়ের সময়েই বাংলা ২টি রাজধানী এক্সপ্রেস, দুরন্ত পেয়েছিল। সেই সময় কিন্তু মমতাকে ‘বাংলার রেলমন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করেন বিজেপি নেতৃত্ব। উত্তর পরে মমতা বলেন, “আমার রাজ্যের জন্য আমি কিছু করতে পেরে আমি গর্বিত। আমি সব রাজ্যের জন্যই কাজ করেছি। জাগরণের পথে এগিয়ে দিয়েছি ভারতীয় রেলকে।” এবার মমতার পথ ধরে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বৈতরণী পার হতে চাইছে পদ্মশিবির।
নজরে ২০২৪। রেললাইন ধরে এগোতে চাইছে বিজেপি। রেল বাজেটে ১৯০ কোটি টাকা বালুরঘাট-হিলি রেল প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘোষিত প্রকল্পের জন্যে ১৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রেল। সেই কৃতিত্ব নিজেদের দিকে টানতে চাইছেন সুকান্তরা। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কাছে বালুরঘাটের জন্য নতুন ট্রেন-সহ রেল উন্নয়নের একাধিক দাবি জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ। এবার, বুনিয়াদপুর-কালিয়াগঞ্জ রেল প্রকল্প এবং গাজল-গুঞ্জরপুর ভায়া ইটাহারের ঘোষিত রেললাইন সম্প্রসারণের জন্য দাবি জানিয়েছেন তিনি। বালুরঘাট থেকে সরাসরি ভেলোর (কাটপাডি) যাওয়ার ট্রেনও চেয়েছেন সুকান্ত।
তালিকায় আছেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তাও। মিরিকে টয় ট্রেন, নকশালবাড়িতে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসের স্টপেজ-সহ এখাধিক দাবি তাঁর। বন্দে ভারত চালুর পরে এবার উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন শহরে ট্রেন চালানোর আবেদন করেছেন তিনি।
রাজধানী এক্সপ্রেসকে মালদহে আনার বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন বিজেপি (BJP) সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র মজুমদার। সম্প্রতি রেল (Rail) মন্ত্রক জানিয়েছে আগরতলা থেকে দিল্লি যাওয়ার রাজধানী এক্সপ্রেস মালদহ স্টেশনেও দাঁড়াবে। এত দিন পর্যন্ত আগরতলা থেকে দিল্লি (Delhi) রাজধানী এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ির পরে সোজা গিয়ে থামত বিহারের কাটিহার জংশনে। জানুয়ারি থেকে নিউ জলপাইগুড়ির পর মালদহ টাউন হয়ে যাবে।