জোট ভীতি! ‘INDIA’ নয় শুধুই ‘ভারত’, জি২০-র আমন্ত্রণপত্রে দেশের নাম বদল

0
3

তবে কি দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া'(India) মুছে শুধু ‘ভারত'(Bharat) করতে চলেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার(Modi Govt)? রাষ্ট্রপতির(President) আয়োজনে জি২০ বৈঠকে একটি নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে চিরাচরিত ভাবে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। যার জেরেই দেশের নাম পরিবর্তনের জল্পনাই ক্রমশ মাত্রা ছাড়াতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র জেরে সরকারিভাবে নামই বদলে দেওয়া হচ্ছে দেশের। একইসঙ্গে অনুমান, মোদি সরকারের তরফে সংসদে যে বিশেষ অধিবেশনের ডাক দেওয়া হয়েছে সেখানেই পেশ হতে পারে এই নাম বদলের প্রস্তাব? তবে এভাবে সংবিধানকে অমান্য করে দেশের নাম বদলের বিরোধিতায় সরব হয়েছে বিরোধীরা।

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জি২০ সমাবেশে অংশ নেওয়া রাষ্ট্রনেতাদের একটি নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। সেই উপলক্ষে আমন্ত্রণপত্রও যাচ্ছে নিমন্ত্রিতদের কাছে। যে আমন্ত্রণপত্র ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতির অন্দরে। কারণ, ভারতের রাষ্ট্রপতি কাউকে কোনও চিঠি লিখলে তাতে চিরাচরিত ভাবে লেখা থাকে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ কথাটি। কিন্তু জি২০ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর চিঠিতে লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ কথাটি লেখা হয়েছে। এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, আচমকা এমন বদলের কারণ কি? তবে মোদি সরকারের এমন পদক্ষেপে যারপরনাই ক্ষুব্ধ বিরোধী শিবির। এই ঘটনার বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজ তারা ভারতের নাম পরিবর্তন করেছে। জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে ইন্ডিয়ার পরিবর্তে উল্লেখ করা হয়েছে ‘ভারত’। ইংরেজিতে আমরা বলি ‘ইন্ডিয়া এবং ‘ভারতীয় সংবিধান’ এবং হিন্দিতে আমরা বলি ‘ভারত কা সংবিধান’। আমরা সবাই বলি ‘ভারত’, এতে নতুন কী আছে? ‘ইন্ডিয়া’ নামটা বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত। হঠাৎ কী এমন হল যে দেশের নাম বদলাতে হল?” নাম বদল নিয়ে তোপ দেগেছেন কংগ্রেসও। এপ্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স-এ বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়ে লেখেন, “তা হলে যেটা শুনেছিলাম, সেটাই সত্যি! আগামী ৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবনে জি২০ নেতাদের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’, অথচ চিরাচরিত ভাবে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ লেখাই দস্তুর।”

প্রসঙ্গত, বিজেপি বিরোধী দলগুলি যে জোট তৈরি করেছে তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’। তাতে কংগ্রেস, তৃণমূল, শিবসেনা (উদ্ধব শিবির), এনসিপি, এসপি, জেডিইউ, ডিএমকের মতো ২৮ টি বিজেপি-বিরোধী দল রয়েছে। প্রথমে পটনা, তার পর বেঙ্গালুরু হয়ে ইন্ডিয়ার নেতারা সম্প্রতি মুম্বইয়েও মিলিত হয়ে বিশদে আলোচনা সেরেছেন। তৈরি হয়েছে সমন্বয় কমিটিও। আগামী লোকসভা ভোটে ইন্ডিয়া মোদির বিজেপিকে কড়া টক্করের মুখে ফেলতে চলেছে বলে বিশ্বাস বিরোধী নেতাদের। চুপ নেই বিজেপিও। ‘ইন্ডিয়া’ নামটি নিয়ে একাধিক বার সরাসরি কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাতে গলা মিলিয়েছেন বিজেপির তাবড় নেতারাও। বিশ্লেষকদের কথায়, নির্বাচনী বছরের শুরুতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৭২ শতাংশ মানুষ মোদির প্রতি খুশি ছিলেন। চলতি আগস্ট মাসের আগে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা ৯ শতাংশ কমে বর্তমানে ৬৩ শতাংশে পৌঁছেছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে ‘ইন্ডিয়া’জোট। আর এই ‘ইন্ডিয়া’ নাম নিয়ে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক মোদি সরকার। ‘জঙ্গি’ তকমা দিতেও ছাড়েননি তিনি। এবার ‘জোট ভীতি’তে INDIA নামটাই তুলে দিতে উদ্যোগী হল মোদি সরকার।