উন্নত প্রযুক্তি (Advance Technology) আর উন্নত ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবস্থাই মহাকাশ অভিযানের (Space Mission) ক্ষেত্রে এখন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। “মিতব্যয়ী ইঞ্জিনিয়ারিং আর যথেষ্ট নয়। আমাদের আরও বড় রকেট, আরও উন্নত ব্যবস্থা প্রয়োজন। আমাদের শক্তিশালী রকেট লাগবে। আরও আধুনিক প্রযুক্তি লাগবে।” চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) যখন ইতিহাস গড়বে বলে স্বপ্ন দেখছে ভারতবাসী, তখন এমন কথাই শোনা গেল প্রাক্তন ইসরো প্রধান কে শিবানের (Fomer ISRO Chief Kailasavadivoo Sivan) মুখে। এর আগে চন্দ্রযান ২ অভিযানের সময়ও চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযানের সফট ল্যান্ডিংয়ের চেষ্টা করেছিল ইসরো (ISRO) । তবে সেবার শেষ মুহূর্তে চন্দ্রযানের ল্যান্ডার ক্র্যাশ করে যাওয়ায় সাফল্য আসেনি।সেই সময় ইসরোর প্রধান ছিলেন কে শিবান (K Sivan)। এবার তিনিই দাবি তুললেন শক্তিশালী রকেট ও আরও বেশি বিনিয়োগের পক্ষে।
ভারতের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী রকেট ব্যবহার করে লুনা ২৫ কে (Luna 25) চাঁদের বাড়ির দিকে রওনা করিয়ে দেয় রাশিয়া। তবে রবিবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী এই মহাকাশযানের সঙ্গে রাশিয়ার (Russia) মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আর কোনও রকমের যোগাযোগ করতে পারছেনা। শনিবার রাতেই জানা গেছিল কক্ষপথে অত্যন্ত দ্রুতগতি থাকার জন্য পরবর্তী ধাপে পৌঁছতে গিয়ে জরুরিকালীন অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে লুনা ২৫ কে। আজ সকাল থেকে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। অন্যদিকে চন্দ্রযান ৩ আপাতত নির্দিষ্ট লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে। ভারতের থেকে রাশিয়ার চন্দ্রাভিযানে ব্যবহৃত রকেট অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই ভারতের অনেক পরে উৎক্ষেপণ করেও তা চন্দ্রযান ৩-এর আগে চাঁদে পা রাখবে বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে কখনই নামতে চায়নি ইসরো। বরং সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ হোক ল্যান্ডার বিক্রমের সেটাই ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীদের প্রধান লক্ষ্য। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন ইসরো প্রধান (Fomer ISRO Chief) জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে চাঁদের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে ভারত। শিবানের কথায়, চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর ডিবুস্টিং কৌশল চলাকালীন, ল্যান্ডারটি ‘স্বয়ংক্রিয় মোডে’ থাকছে। ডেটার উপর ভিত্তি করে এবং নিজস্ব বুদ্ধিমত্তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে যে কীভাবে এর কাজগুলি সম্পাদন করতে হবে। তিনি বলেন যে ল্যান্ডারটি যখন কক্ষপথ থেকে তার অবতরণ স্থল বাছাই করবে তখন এটির বেগ থাকবে প্রতি সেকেন্ডে ২ কিলোমিটার। চাঁদের পৃষ্ঠ স্পর্শ করার সময় এই গতি নামিয়ে আনতে হবে শূন্যতে।
চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপণে ইসরোর খরচ হয় মাত্র ৩৬৫ কোটি। অথচ ভারতের অনেক বলিউড সিনেমা তৈরিতে এর থেকে বেশি বাজেট থাকে বলে আক্ষেপ প্রাক্তন ISRO কর্তার। মঙ্গলযান হোক কি চন্দ্রযান, কম খরচে মহাকাশ অভিযান সফল করার জন্য বিশ্ব জুড়ে ইসরো প্রশংসিত হয়ে এসেছে। কিন্তু যদি রাশিয়া ভারতের আগে চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে অবতরণের ইতিহাস তৈরি করে ফেলে, তাহলে ভারতের আক্ষেপের কারণ হবে ‘মিতব্যয়ী ইঞ্জিনিয়ারিং’, এমনটাই মত কে শিবানের।