যাদবপুরের পড়ুয়া (Jadavpur University)মৃত্যুর তদন্তে ক্রমাগত দীর্ঘ হচ্ছে ধৃতদের তালিকা। শুক্রবার গ্রেফতার আরও ৩। প্রাক্তনী ও পড়ুয়া মিলিয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত ২ প্রাক্তনীর নাম শেখ নাসিম আখতার এবং হিমাংশু কর্মকার (Seikh Nazim Akhtar & Himangshu Karmakar)। ধৃত তৃতীয় জন বর্তমানে কম্পিউটার সায়েন্সের পড়ুয়া, নাম সত্যব্রত রাই (Satyabrata Rai)। তিনি চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া। গত ৯ অগাস্ট, অর্থাৎ ঘটনার দিন তিন জনেই ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। ছাত্রমৃত্যুর পর ২জন বাড়ি চলে যান, ১জন হস্টেলেই ছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। পাস করার পরেও হস্টেলেই সৌরভদের সঙ্গে ঘাঁটি গেড়ে থাকতেন হিমাংশু, নাসিম বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনার রাতে যাদবপুরে জখম পড়ুয়াকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ধৃত প্রাক্তনী হিমাংশু কর্মকার। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা হিমাংশু গণিত বিভাগের এমএসসি পাস আউট। পুলিশি ঝামেলার আঁচ পেয়েই আরেক প্রাক্তনী নাসিম আখতারের (পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা, রসায়ন বিভাগের প্রাক্তনী) সঙ্গে পরামর্শ করে হস্টেল ছেড়ে পালিয়ে যান। আজ তাঁদের আদালতে তোলার পর বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি প্রকাশ্যে আসে। এরপরই বিচারক ৩ ধৃতকে আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এখনও রহস্য উন্মোচনের অনেকটাই বাকি বলে মত পুলিশের। এদিন কমিশনার নিজেই সৌরভ চৌধুরী সহ ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন স্বয়ং কমিশনার।
শনিবার সরকারি আইনজীবী বলেন, ধৃতরা সকলেই সফল অপরাধী হলেও ব্যর্থ অভিনেতা। সেই কারণে বারবার নিজেদের অভিনয় গুণে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হয়েও কোনও ফল মেলেনি। গতকাল ঘটনার পুনর্নির্মাণেও পুলিশকে ভুল পথে চালনার চেষ্টা করা হয়েছে। পুনর্নির্মাণের সময় ৫ জনই পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এমনকি জেরার সময় জিবি মিটিংয়ে তৈরি করা বয়ানই দিয়ে চলেছেন অধিকাংশ ধৃত। পাশাপাশি যাদবপুরকাণ্ডে ইউজিসি-কে (UGC) প্রথম পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১২টি প্রশ্নের জবাবে ৩১টি ফাইল পাঠানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর দাবি, রিপোর্টে র্যাগিং-রোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তা বলা হয়েছে। সেখানে নতুন পড়ুয়াদের ওরিয়েন্টেশন দেওয়া থেকে অ্যান্টি-র্যাগিং সংক্রান্ত পোস্টারও দেওয়া হয়। এমনকি কোনও সমস্যায় পড়লে কথা বলার জন্য দেওয়া হয়েছিল ফোন নম্বর। অ্যান্টি-র্যাগিং-সহ যাবতীয় সার্কুলার বা নির্দেশিকার তালিকা দেওয়া হয়েছে ইউজিসি-কে। মৃত ছাত্র হস্টেলের আবাসিক না হওয়ায়, তাকে নিয়ে হস্টেল সংক্রান্ত ডিক্লারেশন দেওয়ার প্রশ্ন নেই বলে ইউজিসি-কে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে।