উত্তরপ্রদেশের(Uttar Pradesh) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের(kalyan singh) জীবনী পড়ানো হবে স্কুলগুলিতে। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। শীঘ্রই এই বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী সন্দীপ সিং। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় জলঘোলা হতে শুরু করেছে। কারণ, অযোধ্যাতে যখন শতাব্ধী প্রাচীন বাবরি মসজিদ(babri masjid) ধ্বংস করা হয় সেই সময়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কল্যাণ সিং। বিরোধীদের অভিযোগ, কল্যাণের নির্দেশেই পুলিশ-প্রশাসন সেদিন হাত গুটিয়ে থাকায় দিনের আলোয় হিন্দু করসেবকেরা শাবর, কোদালের আঘাতে বাবরি মজজিদ ভেঙে ফেলে। স্কুল পাঠ্য বইতে তাঁর জীবনী পড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

এপ্রসঙ্গে উত্তর প্রদেশের প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রী সন্দীপ সিং লখনউয়ে জানিয়েছেন, কল্যাণ সিংয়ের জীবনী স্কুল পাঠ্যের অংশ করা হবে। কিছু দিনের মধ্যেই রাজ্য সরকার এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করবে। মন্ত্রিসভায় এই ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে। মন্ত্রী এই ঘোষণার সময় পাশেই ছিলেন কল্যাণ পুত্র তথা এটার সাংসদ রাজবীর সিং। তিনি ঘোষণা করেন, কল্যাণের স্মৃতিতে আলিগড়ের রামঘাট রোডের নাম পরিবর্তন করে রামঘাট-কল্যাণ মার্গ করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। রাস্তাটি চার লেনের করতে ৫১৭ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, আগামী সোমবার কল্যাণ সিংয়ের দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী। ওই দিনটি দেশে ‘হিন্দু গৌরব দিবস’ হিসাবে পালন করবে বিজেপি। আলিগড়ে তাঁর গ্রাম আট্রাউলিতে মৃত্যুদিন পালনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গয়াল, বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রমুখ। ওই দিন শুধু আট্রাউলিতেই ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশের আয়োজন করছে বিজেপি।
অবশ্য প্রয়াত কল্যাণকে নিয়ে বিজেপির এতো আয়োজনের পিছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আসলে ১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে কল্যাণ ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই মসজিদ ভাঙার দিন নিষ্ক্রিয় ছিল পুলিশ-প্রশাসন। বলা যেতে পারে তাঁর নিষ্ক্রিয়তার ফলেই আজ অযোধ্যাতে তৈরি হচ্ছে রাম মন্দির। ২০২১-এর ২১ অগাস্ট মারা যান কল্যাণ সিং। তাঁর অন্তেষ্টিতে প্রধানমন্ত্রী মোদি-সব বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু গত বছর তাঁর প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী এবারের মতো গুরুত্ব দিয়ে পালিত হয়নি। এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তাই মেরুকরণ রাজনীতির অঙ্কেই প্রয়াত নেতার স্মরণ অনুষ্ঠানকে নয়া মাত্রা দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি-সহ গোটা উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের চোখে কল্যাণ হিন্দু বীরের মর্যাদা পাচ্ছে। নরেন্দ্র মোদি সরকার অবশ্য গত বছর কল্যাণ সিংকে মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ উপাধি দিয়েছে। এবার স্কুল পাঠ্যে তাঁর অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি কল্যাণের নামে তৈরি হচ্ছে রাস্তা।













































































































































