যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ছাত্র-মৃত্যুর জেরে কার্যত যত উত্তাল বাংলা। গত ৯ অগাষ্ট রাতে ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল তা জানতে ইতিমধ্যেই জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।নিহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। ন’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। যে হলুদ ট্যাক্সি করে যাদবপুরে পড়ুয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই ট্যাক্সি চালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এসবের মাঝেই জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন (National Commission for Protection of Child Rights) লিখিত ভাবে এই মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে দাবি করল। ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য (Manoj Malavya) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জুকে চিঠি পাঠিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো (Priyank Kanoongo)বলে জানা যাচ্ছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বারবার জোরালো হচ্ছে খুনের তত্ত্ব। প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মৃত্যুর পর কড়াকড়ি শুরু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধ্যতামূলক করা হল পরিচয়পত্র। একইসঙ্গে বাড়ছে সিসিটিভি-র নজরদারিও।ঘটনার পর প্রথম গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে। এরপর গ্রেফতার করা হয় বর্তমান পড়ুয়া মনোতোষ ঘোষ ও দীপশেখর দত্তকে। তারপর আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ধৃতদের মধ্যে ৩ জন প্রাক্তনী। আর ৩ জন বর্তমান পড়ুয়া। লালবাজারে তরফে বৃহস্পতিবার বয়ান নেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায়ের। সেই খুনের তদন্তের মধ্যেই NCPCR -এর চিঠিতেই যাদবপুরের ঘটনাকে ‘র্যাগিং এবং আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পড়ুয়ার মৃত্যুর পরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (NCPCR) যাদবপুরের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠিয়েছিল। পরে বুধবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠানো চিঠিতে পকসো আইন যুক্ত করার কথা বলেছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। অথচ সেই চিঠিতেই মৃত পড়ুয়ার নামোল্লেখ করা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারপার্সনের সই করা চিঠির ভিতরে মৃত পড়ুয়ার নাম লেখা আছে বলে খবর। যেখানে ছাত্র নাবালক কিনা সেই নিয়ে নানা কথা উঠে আসছে, সেখানে দাঁড়িয়ে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন কীভাবে অফিসিয়াল চিঠিতে ওই পড়ুয়ার নাম উল্লেখ করল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শুধু তাই নয়, যেখানে পুলিশ খুনের মামলার রুজু করেছে সেখানে এত দ্রুত গোটা ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা কেন করছে NHRC, তা নিয়ে বাড়ছে সন্দেহ।