ভারতীয় দণ্ডবিধি ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধনের লক্ষ্যে তিনটি বিল শুক্রবার লোকসভায় উত্থাপন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন সংসদে তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন “সম্পূর্ণ বাতিল করা হবে।” তবে সেটা সম্ভবত নামেই, কার্যত নতুন মোড়কে তা আরও কঠোর করতে চলেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। ভারতের সার্বভৌমত্ব, একতা এবং অখণ্ডতাকে বিপন্ন করার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অধীনে বিধানগুলি, আইনটি বাতিল করার পরে প্রস্তাবিত ভারতীয় সংহিতা সুরক্ষা বিলের ১৫০ ধারায় বজায় রাখা হবে৷

বর্তমানে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন অনুযায়ী শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা জেলের মেয়াদ যা তিন বছর পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। নয়া বিল অনুযায়ী তিন বছরের কারাদণ্ড পরিবর্তন করে ৭ বছর করা হয়েছে। সংসদে বিল উত্থাপনের সময় এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “প্রত্যেকের কথা বলার অধিকার আছে। আমরা সম্পূর্ণরূপে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বাতিল করছি।” এছাড়াও অমিত শাহ ব্রিটিশ আমলের ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি), ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন বদল করতে এবং গণ পিটুনি, নাবালিকাদের উপর যৌন নিপীড়নের জন্য মৃত্যুদণ্ড, গণধর্ষণের জন্য ২০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান করার জন্য বিল পেশ করেছেন। শাহের পেশ করা বিল অনুযায়ী, ভারতীয় দণ্ডবিধির বদলে এবার সেটা হতে চলেছে ন্যায় সংহিতা। ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড এবার হতে চলেছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা। নতুন বিলে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ শব্দটি অপসারণ করা হয়েছে এবং কিছু পরিবর্তন সহ ১৫০ ধারায় বিধানটি বহাল রাখা হয়েছে।
নতুন বিধানে বলা হয়েছে, “যে কেউ, ইচ্ছাকৃতভাবে বা জেনেশুনে, শব্দ দ্বারা, হয় কথিত বা লিখিত, বা চিহ্ন দ্বারা, বা দৃশ্যমান উপস্থাপনা দ্বারা, বা বৈদ্যুতিন যোগাযোগের মাধ্যমে বা আর্থিক উপায় ব্যবহার করে, বা অন্যথায়, উত্তেজিত বা উত্তেজিত করার চেষ্টা করে, বিচ্ছিন্নতা বা সশস্ত্র বিদ্রোহ বা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, বা বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের অনুভূতিকে উৎসাহিত করে বা ভারতের সার্বভৌমত্ব বা একতা ও অখণ্ডতাকে বিপন্ন করে; বা এই ধরনের কোনো কাজে লিপ্ত বা সংঘটিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং জরিমানাও দিতে হবে।” সংশোধিত আইনে “ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশনের মাধ্যমে, আর্থিক উপায় ব্যবহার করে” যোগ করা হয়েছে। সংশোধিত আইনে, “উত্তেজিত বা উত্তেজিত করার চেষ্টা, বিচ্ছিন্নতা বা সশস্ত্র বিদ্রোহ বা নাশকতামূলক কার্যকলাপ, বা বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের অনুভূতিকে উৎসাহিত করে বা ভারতের সার্বভৌমত্ব বা একতা ও অখণ্ডতাকে বিপন্ন করে” যোগ করা হয়েছে। উত্তেজনাপূর্ণ বা ঘৃণা, অবমাননা বা অসন্তোষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা ছাড়া আইনানুগ উপায়ে সরকারের পদক্ষেপের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে মন্তব্য বা দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়াস এই ধারার অধীনে অপরাধ বলে গণ্য হবে না।













































































































































