ভারতের নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে শেষ কথা কেন্দ্রীয় সরকার। নিয়োগ প্যানেল কারা থাকবেন, তার সমস্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র অর্থ প্রধানমন্ত্রী। আজ, বৃহস্পতিবার এই মর্মে একটি বিল আনতে চলেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। ‘দ্য চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড আদার ইলেকশন কমিশনার্স (অ্যাপয়েন্টমেন্ট, কন্ডিশন অফ সার্ভিসেস অ্যান্ড টার্ম অফ অফিস) বিল, ২০২৩’ নামে এই বিলে বলা হয়েছে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সহ নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং সরকারের মনোনীত কোনও মন্ত্রীকে নিয়ে গঠিত প্যানেল। আর প্রধানমন্ত্রী হবেন প্যানেলের চেয়ারম্যান। অর্থাৎ, সবকিছুই আগের মতো।
কিন্তু প্রশ্ন, কেন্দ্র কেন এই ব্যাপারে নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে? ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, গত মার্চে সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে বলেছিল, নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের একচ্ছত্র অধিকার থাকতে পারে না। নির্বাচন কমিশনাররা হলেন ভোটের রেফারি। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় তাঁর রায়ে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত প্যানেল নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবে।
আদালতের রায় অনুযায়ী প্যানেল তৈরি হলে সরকারের মতামত চাপিয়ে দেওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। তাই আইন করে প্রধান বিচারপতিকে প্যানেল থেকে বাদ দিয়ে তাঁর জায়গায় একজন মন্ত্রীকে সদস্য করা হচ্ছে। ফলে আগের মতোই সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে শেষ কথা বলবেন। পার্থক্য শুধু লোকসভার বিরোধী দলনেতার মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকবে। কিন্তু চলতি লোকসভায় আবার বিরোধী দলনেতা নেই। আর এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মোদি সরকার বিচার বিভাগকে উপেক্ষা করার নতুন নজির গড়ল। ফলে মোদি নিজের পছন্দের লোককেই কমিশনে বসানোর সিদ্ধান্ত যে নিয়ে চলেছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।