সিপিএমের সংস্কৃতি মেনেই কুৎসিত শব্দ প্রয়োগ করে টুইট করেছিলেন সিপিএমের (CPIM) সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md Salim)। সেই টুইটের ভাষা এমনই ছিল যে তাঁর দলের মহিলা সদস্যরাও সমালোচনা করেছিলেন। চাপে পড়ে শব্দ পরিবর্তন করেন সেলিম। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হল না। ‘অশালীন’ পোস্ট, ‘কদর্য’ আক্রমণের জেরে তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চোখের চিকিৎসায় এই মুহূর্তে নিউইয়র্কে রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেখান থেকে নিজের ইনস্টা অ্যাকাউন্টের স্টোরিতে একটি সেলফি পোস্ট করেন তিনি। সেই ছবির সূত্র ধরেই কুরুচিকর আক্রমণ করে একটি টুইট করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। লেখেন, “সাংসদ ওরফে মাফিয়া ডন কয়লা পাচার থেকে নিয়োগ দুর্নীতির মতো একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত নিউইয়র্ক থেকে সেলফি পোস্ট করছেন। দেশ থেকে পালিয়েছেন। আর তাতে সাহায্য করেছেন তাঁর বিজেপির ‘বস’রা। ‘অসদুপায়ে প্রাপ্ত অর্থ পাচার করতে ১৫ জন বিদেশি ‘পতিতা’র অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।” এই জঘন্য, কুরুচিকর আক্রমণের প্রেক্ষিতে আইনজীবী সঞ্জয় বসুর মারফৎ নোটিশ পাঠিয়েছেন অভিষেক।
নোটিশে লেখা হয়েছে, অভিষেক একজন সম্মানিত রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। কঠোর পরিশ্রম, দক্ষতা এবং সততার জন্য শুধু বাংলায় নয়, সারা ভারতে তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন। সম্প্রতি আপনার একটি স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দেখে অভিষেক অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। কারণ, সেটাতে তাঁকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কোনও সত্যতা ছাড়াই এই পোস্টে মিথ্যে এবং মানহানিকর অভিযোগ করেছেন সেলিম। টুইটে অভিষেকের ছবি দেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক। এর থেকে স্পষ্ট উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবেই এই পোস্ট করেছেন সেলিম। “মাফিয়া-ডন” হিসাবে তাঁর উল্লেখ করেছেন এবং বিভিন্ন অবৈধ কেলেঙ্কারি এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ডে তাঁর নাম টেনেছেন যেগুলির সঙ্গে জড়িত নন অভিষেক।
আরও পড়ুন- আয়ুষ্মান ভারতে ব্যাপক অনিয়ম: একই ফোন নম্বরে ৭.৫ লক্ষ গ্রাহক, রিপোর্ট ক্যাগের
নোটিশে আরও বলা হয়, টুইট দেখলেই স্পষ্ট যে অভিষেকের মানহানি করার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই এই পোস্ট। সেলিমের করা সব অভিযোগ অস্বীকার পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলা হয়েছে, যা অভিযোগ করেছেন তা প্রমাণ করুন সেলিম। নোটিশে সাফ বলা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ইচ্ছাকৃত অভিষেকের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এই পোস্ট করেছেন সিপিএম নেতা। তাঁর অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ নেই। অথচ এই মিথ্যে, ভিত্তিহীন অভিযোগের জেরে অভিষেক ও তাঁর পরিবারের জন্য পীড়াদায়ক। অভিষেক অত্যন্ত জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। যে অভিযোগ সেলিম করেছেন, তার মধ্যে অনেকগুলিই আদালতে বিচারাধীন। আর তার সঙ্গে অভিষেকের জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পোস্টের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে সেলিমকে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বুধবার মহমদ্দ সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করেন যৌনকর্মীরা। তাঁর মন্তব্যে যৌনকর্মীদের সম্মানহানি হয়েছে অভিযোগ তুলে মোমিনপুরে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করেন একদল যৌনকর্মী। মহমদ্দ সেলিমকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি তোলেন তাঁরা।