গর্ভ.পাতের ওষুধ তৈরীতে রঙিন মাছের উপর গবেষণা, দারুণ সাফল্য বাঙালী গবেষকের

0
2

বাংলা আজ যা ভাবে ভারত তথা বিশ্ব কাল তা নিয়ে চিন্তা করে- এই প্রবাদ বা ভাবনা যে মিথ্যে নয় তার প্রমাণ আবার মিলল। চিকিৎসা বিজ্ঞানে (Medical Science) প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন আবিষ্কার হচ্ছে যা অবাক করে দিচ্ছে সকলকে। সেই তালিকায় এবার নিজের সাফল্যের নজির তুলে ধরলেন শ্রীরামপুরের বাঙালী গবেষক। এতদিন পর্যন্ত যেকোনও ধরণের এক্সপেরিমেন্টের ক্ষেত্রে ইঁদুর বা গিনিপিগের ব্যবহার দেখা যেত। কিন্তু এবার এই প্রাণীদের বদলে অ্যাকোয়ারিয়ামের রঙিন মাছ ‘মলি’কে (Molly Fish) মডেল করে গর্ভপাতের ওষুধ (drugs for Abortion) তৈরিতে দারুণ সাফল্য শ্রীরামপুর হাউসিং এস্টেটের বাসিন্দা ডঃ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদারের (Dr. Mritunjay Majumder)।

হরিণঘাটার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি থেকে ফার্মোকলজিতে পিএইচডি (Ph.d in pharmacology) করেন মৃত্যুঞ্জয়। এখন চাকদায় নেতাজী সুভাষ বোস ইন্সটিটিউট অফ ফার্মাসিতে প্রফেসার ও বিভাগীয় প্রধান হিসাবে কর্মরত। সেই কলেজেরই কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিনের (reproductive medicine)উপর গবেষণা শুরু করেন। প্রায় সাড়ে ছয় বছর গবেষণার পর সাফল্য আসে। চলতি বছরের ২৬ শে মে ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অ্যাক্ট ইন্ডিয়া (Intellectual Property act India)জার্নালে এই বিষয়টি প্রকাশিত হয়।

কিন্তু মাছ নিয়ে পরীক্ষা কেন? মৃত্যুঞ্জয় বলেন,ইঁদুর, হ্যামস্টার বা গিনিপিগের মডেল খুঁজে পেতে সমস্যা হয়। আর যে প্রাণীর উপর গবেষণা করা হয় সেই প্রাণীর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী । এই সব প্রাণীর একটি মডেলে গবেষণা খুবই খরচ সাপেক্ষ। মলি মাছের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নেই। পয়োসিলিয়া স্পিন্ফস বা মলি মাছ সহজলভ্য। ভিভি পোরাস প্রজাতির হওয়ায় এই মাছ নিয়ে গবেষণা করা যায় অনায়াসে।একটি অ্যাকোয়ারিয়ামে মেল ফিমেল মলিকে মেটিং- এর পর পৃথক করে রাখা হয়। ১৯ দিনের মাথায় ফিমেল মলি মাছকে খাবারের সাথে মিশিয়ে ওষুধ দেওয়া হয়। গবেষক জানান,বিশ্বে এই গবেষণা প্রথম। তাঁকে গবেষণায় সাহায্য করেন এনএসবিআইএফ এর প্রিন্সিপল ডঃ অর্নব সামন্ত, যিনি গবেষণার স্ট্যাটিস্টিক ডিজাইন করেছেন। এছাড়া প্রদীপ রায়,সৌরভ রায়,নীলেন্দু শেখর রায় ও ঐন্দ্রিলা বৈশ্য গবেষণায় সাহায্য করেছেন। এই ওষুধ বাজারে এলে তার দাম অনেক কম হবে বলে দাবি বাঙালি গবেষকের।
মৃত্যুঞ্জয় জানিয়েছেন,এই গবেষণা থেকে যে ওষুধ বাজারে আসবে তার দাম হবে অনেক কম।