দেশের উচ্চবিত্ত বা বহু নামীদামী মানুষের নিজস্ব জেট রয়েছে। একথা কমবেশী প্রায় সকলেরই জানা। কিন্তু তাই বলে একটা গোটা ট্রেন রয়েছে এক কৃষকের কাছে! বিশ্বাস না হলেও একথা সত্যি। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব? কারণ আমদের দেশের রেল পরিষেবা সমস্তটাটাই কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রিণের আওতায় রয়েছে। যে কারণে ভারতীয় রেলের তরফেই আমরা সমস্ত সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকি। তাহলে কী করে একটা গোটা ট্রেনের মালিক হলেন পাঞ্জাবের লুধিয়ানার এক কৃষক? রেলেরই ভুলে আজ একটি আস্ত ট্রেনের মালিক তিনি। এমনকি দিন শেষে ট্রেনের আয়ের গোটা টাকাটাই ঠিক হাতে পেয়ে যান তিনি।
আস্ত ট্রেন মালিকের নাম, সম্পূরণ সিং। তিনি পাঞ্জাবের লুধিয়ানার কাতানা গ্রামের বাসিন্দা। ২০০৭ সালে রেলওয়ে বোর্ড লুধিয়ানা-চণ্ডিগড় রুটে রেললাইন নির্মাণের কৃষকদের জমি কিনছিল। তখন সম্পূরণ সিংয়ের জমিও কিনেছিল রেল। কিন্তু সেই সময় জমির দাম দেওয়া হয়েছিল মাত্র ৪২ লক্ষ টাকা। রেলের থেকে সম্পূরণ জমি বিক্রি বাবদ ১.০৫ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। তাঁর পাওনার পুরো টানা না পেয়ে ২০১২ সালে আদালতে ক্ষতিপূরণের দাবিতে মামলা করেন। তখন মামলার রায়ে জয়ী হন সম্পূরণ সিং। ২০১৫ সালে রেলকে সম্পূরণের বাকি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। একইসঙ্গে আদালত জানিয়ে দেয়, একর প্রতি ৫০ লক্ষ টাকা হিসেবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তবে নর্দার্ন রেল সম্পূরণ সিংকে সেই টাকা ফেরাতে ব্যর্থ হয়।
সম্পূরণ সঠিক সময় ওই ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় আদালত তাঁর হাতে স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস তুলে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এই ট্রেনটি প্রতিদিন নয়াদিল্লি এবং অমৃতসর রুটে চলাচল করে। ২০১৭ সালেই ২০ কোচের স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেসের মালিকানা পান সম্পূরণ সিং। ট্রেনটি হাতে পাওয়ার পরই আইনজীবীর সঙ্গে লুধিয়ানা স্টেশনে গিয়েছিলেন তিনি। স্টেশনে ঢোকার পরে ট্রেনটিকে আবার গন্তব্যে রওনা করিয়ে দেন সম্পূরণ। স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস ট্রেনের মালিকানা পাওয়ার পাশাপাশি আদালতের রায়ে লুধিয়ানা রেলওয়ের স্টেশন মাস্টারের দফতরও পেয়েছেন সম্পূরণ সিং। তবে এখনও শোনা যায় এই মামলা আদালতে চলছে।
আরও পড়ুন:ফের একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাজধানীর রাজপথ, চোখরাঙাচ্ছে যমুনার জলস্তর