লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব ইন্ডিয়ার, জোটে না থাকলেও বিরোধীদের পাশে বিআরএসও

0
1

ঐক্যবদ্ধ ‘ইন্ডিয়া’। তিনমাস ধরে জ্বলতে থাকা মণিপুর নিয়ে মোদি সরকারের ঘুম ভাঙাতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনল ২৬টি বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’। সংসদীয় পদ্ধতিতেই গোটা দেশের সামনে তুলে ধরা হল নিষ্ক্রিয় সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোটের প্রতিবাদ। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, একই ইস্যুতে আলাদা করে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছে তেলেঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-ও। বুধবার ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। অন্যদিকে বিআরএসের হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন সাংসদ নামা নাগেশ্বর রাও। ঘটনা হল, তেলেঙ্গানার শাসকদল বিআরএস ২৬টি বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’য় অংশ নেয়নি। তেলেঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় ইন্ডিয়া জোটে তারা সামিল হয়নি বলে মনে করা হয়। যদিও সাম্প্রতিক অতীতে বহুবার বিজেপির বিরোধিতায় সরব হতে দেখা গিয়েছে তাদের। তৃণমূলনেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রয়েছে কেসিআরের।

বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও এমনিতে খাতায়কলমে মোদি সরকারের কোনও সঙ্কট তৈরি হবে না। কারণ বিজেপি জোটের পক্ষে ৩৩২ জন সাংসদের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু গোটা ঘটনার তাৎপর্য সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয়। মণিপুরের প্রতি রাজধর্ম পালনে ব্যর্থ মোদি সরকারের মুখোশ খুলে দিতেই ঐক্যবদ্ধ বিরোধী শিবিরের অনাস্থা প্রস্তাব পেশের উদ্যোগ। এর লক্ষ্য, আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে জনবিরোধী মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের আবেগ তুলে ধরে সংসদীয় পদ্ধতিতে ‘বার্তা’ দেওয়া। এই প্রসঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম শরিক শিবসেনার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মণিপুর নিয়ে বক্তব্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদি যাতে সংসদে আসেন, সেই কারণেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। অর্থাৎ অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে অনিচ্ছুক প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে মণিপুর ইস্যুতে মুখ খুলতে বাধ্য করতে চান বিরোধীরা।

এদিন সকালেই লোকসভায় মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব পেশ করেন কংগ্রেস সা‌ংসদ মণীশ তিওয়ারি। রাজ্যসভায় ২৬৭ নম্বর ধারায় নোটিশ দিয়ে আলোচনার দাবি জানান আপ সাংসদ রাঘব চাড্ডা, আরজেডি সাংসদ মনোজ কুমার ঝা, ডিএমকে সাংসদ তিরুচি শিবা এবং কংগ্রেস সাংসদ রাজীব শুক্লা। মণিপুর নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে সংসদের বাদল অধিবেশনে দুই কক্ষেই লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিরোধী দলগুলি। এর জেরে দফায় দফায় মুলতুবি হচ্ছে রাজ্যসভা এবং লোকসভার অধিবেশন।