INDIA-কে জ*ঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তুলনা প্রধানমন্ত্রীর, মোদিকে পাল্টা ধুয়ে দিলেন বিরোধীরা

0
6

দু’মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও জাতিদাঙ্গায় অগ্নিগর্ভ বিজেপি শাসিত ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। খুন-ধর্ষণ-রাহাজানির ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্ৰধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এদিকে অশান্ত মণিপুর নিয়ে লাগাতার চতুর্থ দিন উত্তাল সংসদের বাদল অধিবেশন। সেই অবস্থায় বিরোধীদের জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে তুলনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে যে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ে উঠেছে, তার নাম রাখা হয়েছে “INDIA”. দেশের নামে জোটের নাম রাখার সিদ্ধান্তকে নিশানা করতে গিয়ে, বিরোধীদের জঙ্গিগোষ্ঠী মুজাহিদিন, PFI-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন মোদি। আর মোদির এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন বিরোধী শিবিরের নেতা-নেত্রীরা।

মোদির এই মন্তব্য সামনে আসতেই বিরোধী জোটের একের।পর এক নেতা-নেত্রীরা কড়া প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছেন। এক নজরে কে কী বললেন—

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee):

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। মনে হচ্ছে তিনি ‘ইন্ডিয়া’ নামটি পছন্দ করেছেন এবং সাধারণ জনগণও তাই। ভারতীয় দল যখন মাঠে নামে, সেটা যে কোনও খেলাই হোক, কেউ কী তাদের ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন বলে? আমাদের দেশের নাম, আমাদের মাতৃভূমি ভারত। উনি ভারতের বিরুদ্ধে যত বেশি বাজে কথা বা মন্তব্য করবেন, তাতে এটাই ইঙ্গিত দেয় যে তিনি আমাদের নাম পছন্দ করেছেন।

রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi):

আপনি যে নামেই আমাদের ডাকুন মিস্টার মোদি, আমরাই ইন্ডিয়া। আমরাই মণিপুরের পাশে থেকে প্রতিটি মহিলা ও শিশুর চোখের জল মোছার চেষ্টা করব। আমরাই সবার জন্য ভালবাসা ও শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনব। মণিপুরে ভারতের ধারণাকে ফিরিয়ে আনব আমরাই।

জয়া বচ্চন (Jaya Bachhan):

চেয়ারকে সম্মান করি। তাই প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর সব ভাষণ যদি শুনি আমরা, তাহলেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।

ডেরেক ও’ব্রায়েন:

প্রধানমন্ত্রী একটি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে রাজনৈতিক জোটের তুলনা করে আসলে মণিপুর সঙ্কট থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার একটি মরিয়া চেষ্টা। সংসদের বাইরে কথা না বলে আমরা তাঁকে মণিপুর ইস্যু নিয়ে হাউসে আলোচনা করার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।

সাকেত গোখলে:

I.N.D.I.A. ঐক্যবদ্ধ! একটি ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোট এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে সমান্তরাল করলে তা গণতন্ত্রকে দুর্বল করে প্রধানমন্ত্রীকে বলছি, এখনই উপযুক্ত সময় আপনার মণিপুর সঙ্কট সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করার। কিন্তু পরিবর্তে আপনি অস্বস্তিকর তুলনা টানছেন।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়:

বোঝা যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদি ভয় পেয়ে গিয়েছেন। এই জোট কাজ করতে শুরু করেছে। সংগঠিত ভাবে, পরিকল্পিত চিন্তাভাবনা নিয়ে এগোচ্ছে। সেটা যে কাজ করছে, বুঝতে পারছেন, বুঝতে পারছেন সময় হয়ে এসেছে। তাই এসব উল্টোপাল্টা মন্তব্য করছেন।

দোলা সেন:

প্রধানমন্ত্রীর জানা উচিত, বিরোধী দলও দেশের-জাতির একটি অংশ। এবং সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে রাজনৈতিক জোটের সম্পর্ক কঠোর নিন্দার দাবি রাখে। মনিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংসদে আলোচনা না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের লড়াই থামাব না!

মহুয়া মৈত্র:

প্রধানমন্ত্রী একটি শক্তিশালী বিরোধী জোটকে ভয় পেয়েছেন। সেই ভয় আড়াল করার চেষ্টা থেকেই এই জোটকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। যা অত্যন্ত লজ্জাজনক। I.N.D.I.A মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি চায়। প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বিবৃতি দিন। পালিয়ে যাবেন না।

সায়নী ঘোষ:

প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে নিজের দলের আক্রান্ত বিধায়কের সঙ্গে দেখা করেন না। প্রধানমন্ত্রীর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সঙ্গে INDIA জোটের তুলনা করা বিরোধী রাজনৈতিক প্রতি তাঁর স্পষ্ট অসম্মান ও নির্লজ্জতার প্রদর্শন।

প্রদীপ ভট্টাচার্য:

কংগ্রেসের মতো একটা দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠান, যা ১৩৮ বছর অতিক্রম করেছে, তখনও জন্মই হয়নি বিজেপি-র। বিজেপি কখনও ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি, জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও লড়াই করেনি…মোদি ভুলে যাচ্ছেন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন ইন্দিরা গাঁধী, রাহুল গাঁধী। তাঁদের কে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন? একটা মণিপুর নিয়ে উত্তর দিতে পর্যন্ত ভয় পাচ্ছেন। তাই কী বললেন, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য:

দুর্ভাগ্যজনক বিষয় যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজের দেশের ইতিহাস জানেন না। জানেন না দেশের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার ভাবনার প্রতিফলন। তিনি তাঁর সন্ত্রাসবাদী যে মানসিকতা, তারই প্রকাশ ঘটালেন। বৃহত্তর রাজনৈতিক সম্মেলনকে সন্ত্রাসবাদী, মুজাহিদিন বলছেন। প্রমাণ হয়, বিজেপি এবং মোদি সাধারণ মানুষের ঐক্যকে ভয় পাচ্ছেন তাই সবের মধ্যে সন্ত্রাস দেখছেন।