মণিপুরে যেন আতঙ্ক নগরী। মণিপুর যেন মৃত্যুপুরী। একের এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড। জাতিদাঙ্গায় তপ্ত বিভীষিকার মণিপুরে এবার স্বাধীনতা সংগ্রামীর বৃদ্ধা স্ত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা হামলাকারীদের। মেইতেই-কুকি সংঘর্ষের শিকার এবার এক স্বাধীনতা সংগ্রামীর বৃদ্ধ স্ত্রী। আশি বছরের ওই বৃদ্ধকে ঘরে তালা দিয়ে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মারল হামলাকারীরা। মণিপুরের কাকচিং জেলার সেরউ গ্রামের ঘটনা। গত ২৮ মে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। সেরউ থানায় এফআইআর হওয়ার পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছে।
আরও পড়ুন:কলকাতা ও পূর্বাঞ্চলের প্রথম হাইপারবারিক অক্সিজেন থেরাপি সেন্টার খোলা হল
ওই বৃদ্ধার স্বামী এস চূড়াচন্দ্র সিং ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। মারা গিয়েছেন ৮০ বছর বয়সে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এ পি জে আব্দুল কালাম চূড়াচন্দ্র সিংকে সম্মানিত করেছিলেন। গত ২৮ মে ভোরে সেরউ গ্রামে হামলা চালায় সশস্ত্র হামলাকারীরা। ইবেতোম্বি নামে ওই বৃদ্ধাকে ঘরবন্দি করে তাঁর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। গ্রামজুড়ে ব্যাপাক গোলগুলি করে কয়েকশো অস্ত্রধারী যুবক। বৃদ্ধার ২২ বছরের নাতি প্রমেকান্তা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে, “আমরা যখন এলাম তখন সব শেষ।”
ভয়ঙ্কর ওই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে প্রেমকান্তা বলেন, “গ্রামে হামলা হতেই ঠাকুমা আমাদের বললেন ঘর ছেড়ে পালাতে। বললে কিছুক্ষণ পরে এসে আমাকে নিয়ে যেও। সেটাও ওর শেষ কথা। হামলাকারীরা গুলি চালাচ্ছিল। ওনার বয়স হয়েছিল। তাই পালানোর ক্ষমতা ওর ছিল না।”
সংবাদমাধ্য়মে প্রেমকান্তা আরও জানিয়েছেন, টানা দুমাস গ্রামে ঢুকতে পারেননি। যখন শেষপর্যন্ত ফিরে এলেন তখন দেখেন ঘরবাড়ি বলে কিছু আর নেই। কিছু ভাঙা কাঠ ও ঘরের জিনিসপত্র পড়ে রয়েছে। দেখা বোঝাই যাবে না ওটা কখনও কোনও ঘর ছিল। তবে মূল্যবান জিনিসের মধ্যে পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি কালামের সঙ্গে দাদুর একটি ছবি। আর পাওয়া গিয়েছে একটি মাথার খুলি।
অন্যদিকে, সি খবর সামনে আসতেই সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে। ট্যুইটারে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে নিশানা করে তিনি লিখেছেন, “আরও একটি ভয়ঙ্কর
ঘটনা সামনে এল। স্বাধীনতা সংগ্রামীর বৃদ্ধা স্ত্রীকে পুড়িয়ে মেরেছে উন্মত্ত জনতা। এসব দেখেও মোদি ও কেন্দ্র সরকার ব্যবস্থা না নিয়ে অন্য রাজ্যে কোথায় কী ভুয়ো খবর রটছে তা নিয়ে হইচই করে মণিপুরের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। বীরেন সিংয়ের আমলে মণিপুরে আদিবাসী ও মহিলাদের ফরে অবর্ণনীয় অত্যাচার হয়েছে।”