গরিবের ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধানকে ৫ কোটি উপহার মোদির!

0
1

বাংলার মানুষের ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার(Modi govt)। অথচ সরকারি কোষাগরের টাকায় বিদেশ ঘুরে বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের উপহার বিলি করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রপতির স্ত্রীকে একুশ কোটি টাকার সবুজ হীরের আংটি উপহার দেওয়ার পর এবার ফ্রান্স(France) সফরে গিয়ে টাকা ওড়াতে দেখা গেল মোদিকে। এই সফরে ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধানকে ৫ কোটি টাকার উপহার দিলেন তিনি।

ফ্রান্স সফরে মোদির উপহারের তালিকা দেখে নিন…

চন্দন কাঠের সেতার: ২৮ ইঞ্চি উচ্চতার একটি চন্দন কাঠের সেতার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরকে উপহার দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। দক্ষিণ ভারতীয় রীতিতে খোদাই করা নকশাদার এই বাদ্যযন্ত্রের মূল থিম সরস্বতী। এর সঙ্গে খোদাই করা রয়েছে সিদ্ধিদাতা গণেশ এবং পুরোটা জুড়ে ময়ূর। অসম্ভব সুন্দর হস্তশিল্পের এই সেতারের দাম কমপক্ষে ২ কোটি টাকা।

চন্দন কাঠের বাক্সে পচমপল্লী ইক্কত: তেলেঙ্গানার পঞ্চম পল্লী শহরের এই বিশেষ ধরনের শাড়ি, বিখ্যাত তার রঙের চমদারিতে। প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর জন্য এই শাড়ি মোদি উপহার দিলেন নকশাদার এক চন্দন কাঠের বাক্স করে। সেই বাক্সের কারুকাজ সুগন্ধ মূল উপহারের থেকে কোন অংশে কম নয়। শাড়ি ও তার বাক্স মিলিতভাবে এক কোটি টাকা অনায়াসে অতিক্রম করবে।

মার্বেল পাথরের টেবিল: ফরাসি প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বরনের জন্য উপহার দেওয়া হল রঙিন মূল্যবান পাথর খোদাই করা মার্বেল পাথরের টেবিল। রাজস্থানের মাকরানার মার্বেলের ওপর মূল্যবান পাথর দিয়ে তৈরি এই টেবিলে পুরোটাই হাতের কাজ। যার মূল্য অন্তত এক কোটি টাকা।

হাতে বোনা কাশ্মীরি কার্পেট: ফরাসি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি প্রেসিডেন্টের জন্য দেওয়া হল কাশ্মীরি কার্পেট। সম্পূর্ণ হাতে বোনা নরম তুলতুলে এই কার্পেটের জগৎ জোড়া খ্যাতি। এই কার্পেটের ওপর হাতে বুনে তোলা হয়েছে নানান দেব দেবীর ছবি। রঙের বৈচিত্রেও ভরপুর এই কার্পেট। দাম ন্যূনতম ৫০ লক্ষ টাকা।

চন্দন কাঠের হাতি: ফরাসি সেনেটের প্রেসিডেন্টকে উপহার দেওয়া হয়েছে চন্দন কাঠের হাতি। যার ওপর নানান ধরনের নকশা। প্রায় দুই ফুট উচ্চতার এই হাতি দেওয়া হল শক্তি ও বুদ্ধির প্রতীক হিসেবে। এর মূল্য কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা।

সবমিলিয়ে ফ্রান্স সফরে বিদেশী রাষ্ট্র নেতাদের প্রধানমন্ত্রী উপহার দিয়েছেন ৪ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দামের নানান সামগ্রী। আর এই দু মাসে বিদেশি রাষ্ট্র নেতাদের উপহার দিতে সরকারি কোষাগার থেকে মোদির ব্যয় হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। এখন প্রশ্ন হল, যেখানে দেশের গরিব মানুষগুলিকে ১০০ দিনের কাজ করিয়ে তাদের টাকা আটকে রাখা হয়েছে সেখানে তাদেরই করের টাকা কিভাবে নির্লজ্জের মত বিদেশী রাষ্ট্র নেতাদের হাত করতে খরচ করে চলেছেন মোদি। ভাবখানা এমন যেন নরেন্দ্র মোদি নিজের পকেট থেকে এই টাকা খরচ করছেন। প্রশ্ন উঠছে এই যে বিপুল টাকা প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর ও উপহার বাবদ খরচ হচ্ছে তার হিসেব দিক নরেন্দ্র মোদির সরকার। যে দেশে ১০০ দিনের কাজ করে সাধারণ মানুষ তার প্রাপ্য টাকা পায় না, মানুষের মাথার ওপর ছাদ নেই, স্কুলের মিড ডে মিল কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী কিভাবে বিদেশে রাষ্ট্রপ্রধানদের খুশি করতে গরিবের টাকা এভাবে উড়িয়ে বেড়াচ্ছেন!