চাঁদের দেশে যাচ্ছে ভারতের চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)। এর আগে দুবার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু এবার মাইলফলক গড়তেই হবে -এই লক্ষ্য নিয়ে ISRO দারুণ কাজ করেছে।এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া , চিন যান পাঠিয়েছে চাঁদ মামার বাড়িতে। এবার ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে ভারত। শুক্রবার অর্থাৎ ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের (Satish Dhawan Space Centre) লঞ্চিং প্যাড থেকে ঠিক দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর (ISRO) চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3)। উতক্ষেপন একদম সফল। কোথাও কোনও ত্রুটি নেই। বিজ্ঞানীরা উচ্ছ্বসিত। এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন ভারতের ‘রকেট মানবী’ ঋতু কারিধাল শ্রীবাস্তব (Ritu Karidhal Srivastava)। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মিশন ডিরেক্টর তিনিই। তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ISRO-এর বিজ্ঞানীরা।
ঋতুর মুকুটে সাফল্যের পালক অবশ্য নতুন কিছু নেয়। মঙ্গল অভিযানের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ঋতু। চন্দ্রযান-৩ অভিযানে যাতে অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি না হয় সেইদিকেই বিশেষ নজর দিয়েছেন ঋতু। লখনউ এর মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েটা বরাবরই মহাকাশ নিয়ে আগ্রহী ছিলেন। ভারতের ইসরো হোক আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা- মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত কোনও খবর পেলেই তা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে দিতেন। কাগজের কাটিং নিজের কাছে সযত্নে রেখে দিতেন। ১৯৯৬ সালে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর পাশ করে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেস (আইআইএসসি)-এর থেকে এমটেক নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৯৭ সালে ইসরোতে যোগ দেন ঋতু। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে তাঁর প্রায় ২০টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এ বার চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মিশন ডিরেক্টর তিনিই। এর আগে ইসরো টিম অ্যাওয়ার্ড ফর এমওএম (Mars Orbiter Mission) সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। মঙ্গল অভিযানে তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। ‘ওমেন অ্যাচিভার্স ইন এয়ারোস্পেস, ২০১৭’ সম্মান পেয়েছেন ঋতু কারিধাল শ্রীবাস্তব। এবার তাঁর কাঁধেই ভরসা রেখেছে ISRO।
এই চন্দ্রযানের কেন্দ্রে রয়েছে এলভিএম-৩ রকেট। এই বাহুবলী রকেটের মধ্যে দুটি স্তরে কঠিন জ্বালানি এবং একটি স্তরে তরল জ্বালানি রয়েছে। চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নাম বিক্রম এবং রোভারের নাম প্রজ্ঞান রাখা হয়েছে । চার বছর আগে সেপ্টেম্বরে ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদে নামতে ব্যর্থ হলেও, সেই অরবিটারটি এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে । তাই এবার আর কোনও অরবিটার পাঠায় নি ভারত। চাঁদের মাটিতে নামতে কক্ষপথে থাকা চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারেরই সাহায্য নেবে চন্দ্রযান-৩-এর সঙ্গে যাওয়া ল্যান্ডার আর তার ভিতরে থাকা রোভার। ISRO এবং NASA যৌথ ভাবেই এই বিষয়টির দিকে নজর রাখবে।