ওড়িশার বাহানগা স্টেশনে প্রায় একমাস আগে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। সেই ট্রেন দুর্ঘটনা কী কারণে ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখতে রেলের তরফে তদন্ত চালানো হয়। রেল সুরক্ষা কমিশনার সেই তদন্তের রিপোর্ট সম্প্রতি জমা দিয়েছেন। প্রকাশ্যে এসেছে সেই রিপোর্টের কিছু অংশ।
উল্লেখ্য, বালাসোর দুর্ঘটনা নিয়ে পেশ করা রেলের রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে সিগন্যালিংয়ের মেরামতিতে ত্রুটি ছিল। এর জেরেই যাত্রীবাহী করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি লুপ লাইনে ঢুকে মালগাড়িকে ধাক্কা মারে এবং পরে হমসফর এক্সপ্রেসের ধাক্কায় এত মানুষের মৃত্যু হয়।স্বাভিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, নাশকতার যে তত্ত্ব আগেভাগে খাড়া করা হয়েছিল রেলের তরফে তার সঙ্গে রিপোর্টের কোনও মিল নেই।
রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার এ এম চৌধুরী নিজের রিপোর্টে দাবি করেছেন, বিভিন্ন স্তরে সিগন্যালিংয়ের ত্রুটির কারণে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং এবং টেলিকমিউনিকেশন দফতরের কিছু গলদের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তাই যান্ত্রিক গোলযোগ হলেও তা মানুষের ভুলেই হয়েছিল। রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৬ মে খড়গপুর ডিভিশনের বাঁকড়ানয়াবাজ স্টেশনে এই একই ধরনের ত্রুটি দেখা দিয়েছিল সিগন্যালিংয়ে। যার জেরে ভুল ট্র্যাকে ঢুকে পড়েছিল ট্রেন।অতীত থেকে শিক্ষা নিলে এই ট্রাজেডি এড়ানো যেত।
প্রসঙ্গত, গত ২ জুন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতই ছিল যে যাত্রীবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন উঠে যায় এক মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের অধিকাংশ বগি ছিটকে পড়ে পাশের লাইনে। এই সময় উলটো দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলিতে। এর আগে এই দুর্ঘটনা নিয়ে একটি প্রাথমিক রিপোর্টও জমা দিয়েছিল সিআরএস। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে ভুল লাইনে ঢুকে পড়ে আপ ১২৮৪১ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এই মারাত্মক ভুলের কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এই লুপ লাইনে করমণ্ডল এক্সপ্রেসটা না ঢুকলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।