৭৫ বছরে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট ম্যাচে ২৫০-র বেশি রান তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নিল। ১৯৪৮ সালে শেষ বার এমন ঘটনা ঘটেছিল, যখন ডন ব্র্যাডম্যানের দল লিডসে ৪০৪ রান তাড়া করে জিতেছিল।
বৃষ্টির কারণে বার্মিংহ্যাম টেস্টের পঞ্চম দিনের খেলা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন, এই টেস্ট বোধহয় বৃষ্টিতেই ভেসে গিয়ে ড্র হয়ে যাবে। তবে বৃষ্টি থেমে খেলা শুরু হয় মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর। শেষ দিন প্যাট কামিন্সদের দরকার ছিল ১৭৪ রান। অন্য দিকে, জয় থেকে ৭ উইকেট দূরে ছিলেন বেন স্টোকসরা। তবে শেষ হাসি হাসল অস্ট্রেলিয়াই।
সদ্য টেস্টে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে অজিরা। এবার ইংল্যান্ডের ব্যাজবল তত্বকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তারা অ্যাশেজের প্রথম টেস্টেও জয় ছিনিয়ে নিল। জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮১ রান। বৃষ্টিবিঘ্নিত টেস্টে ৮ উইকেট হারিয়ে সেই রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। সেই সঙ্গে প্যাট কামিন্সরা স্পর্শ করে ফেলেন ৭৫ বছর আগের নজির। ৭৫ বছরে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট ম্যাচে ২৫০-র বেশি রান তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নিল। ১৯৪৮ সালে শেষ বার এমন ঘটনা ঘটেছিল, যখন ডন ব্র্যাডম্যানের দল লিডসে ৪০৪ রান তাড়া করে জিতেছিল। যা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের নজির।
পঞ্চম দিনের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য ১৭৪ রানের প্রয়োজন ছিল। হাতে ছিল সাত উইকেট। ক্রিজে অজিদের হয়ে প্রথম ইনিংসে শতরান হাঁকানো উসমান খাওয়াজা ৩৪ রানে ব্যাট করছিলেন। তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য ছিলেন নাইট ওয়াচ ম্য়ান হিসাবে মাঠে নামা স্কট বোল্যান্ড। এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখার আশায় ছিলেন সকলেই। এমন পরিস্থিতিতে বাধ সাধেন বরুণদেব। বৃষ্টির জন্য গোটা প্রথম সেশনই বাতিল হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচে তিনটি ফলাফলই সম্ভব ছিল।
দ্বিতীয় সেশনে খেলা শুরু হলেও বোল্যান্ডকে ২০ রানে সাজঘরে ফেরত পাঠান স্টুয়ার্ট ব্রড। ট্র্যাভিস হেড ক্রিজে নেমে আগ্রাসী ভঙ্গিমায় ব্যাট করা শুরু করেছিলেন বটে। তবে তিনি ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি। তাঁকে সাজঘরে ফেরত পাঠান মঈন আলি। তবে খাওয়াজা একদিক ধরে রেখেছিলেন। তিনি নিজের অর্ধশতরানও পূর্ণ। তাঁকে সঙ্গ দেন ক্যামেরন গ্রিন। চা বিরতির আগে আর কোনও উইকেট হারায়নি অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় সেশন শেষে অজিদের স্কোর ছিল পাঁচ উইকেটের বিনিময়ে ১৮৩ রান। জয়ের জন্য শেষ সেশনে আরও ৯৮ রান তুলতে হত খাওয়াজাদের।
দিনের শেষ সেশনের খেলা শুরু হতেই পরপর ধাক্কা খায় অজিরা। অলি রবিনসন ক্যামেরন গ্রিনকে ২৮ রানে আউট করেন। সেট খাওয়াজাকে ৬৫ রানে ঘরে ফেরান বেন স্টোকস। এরপর নিজের বোলিংয়ে এক দুর্ধর্ষ ক্যাচ নিয়ে অ্যালেক্স ক্য়ারিকে জো রুট সাজঘরে ফেরত পাঠান। ২২৭ রানে আট উইকেট হারিয়ে নিশ্চিত পরাজয়ের দিকে এগোচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেই দলের ত্রাতা হয়ে উঠেন কামিন্স। চতুর্থ দিনে তিনি বল হাতে নিজের দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। এদিন ব্যাট হাতে নিজের পরিপক্ক ইনিংসে সকলকে মুগ্ধ করলেন কামিন্স। তাঁর দৌলতেই জয় পেল অজিরা। লায়নও ১৬ রানে অপরাজিত থেকে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন।