গাঁয়ের বধূ আজও অপেক্ষায়, রানার বোধহয় ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, ‘আয় খুকু আয়’ শোনার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে ছোট্ট মেয়েটা- আর এই সব কিছু বড্ড বেশি করে মনে করিয়ে দেয় আজ ১৬ জুন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের (Hemanta Mukhopadhyay) জন্মদিন। প্রকৃতিতে বর্ষা আসেনি, কিন্তু সুরের বৃষ্টিতে এত বছর পেরিয়েও আজকের দিনে ভিজলো বাঙালি।

১৯২০ সালে আজকের দিনে সংগীত জগতের প্রবাদ প্রতীম পুরুষের জন্ম হয়। শুধু কিংবদন্তি বাঙালি কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী নন, তিনি ছিলেন সুরকার (Music Composer) , সঙ্গীত পরিচালক এবং প্রযোজকও। বিভিন্ন ঘরানার গানে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন শিল্পী। যেমন বাংলা তেমন হিন্দি, অপার দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন নিজের কাজের মাধ্যমে। তার কন্ঠের দৃপ্ততায় সমৃদ্ধ হতো বাংলা সংগীত জগত। এই প্রজন্মের শিল্পীরাও তাঁর গান গেয়ে নিজেদের প্রতিভা বিকাশ করতে আগ্রহী। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (Hemanta Mukhopadhyay)মানে ধুতি, শার্ট আর সুরের এক অপরূপ রসায়ন, যা বাঙালি এই শিল্পীর আগমনের আগে যেমন দেখেনি, আগামী ১০০ বছরেও দেখার সম্ভাবনা কম। গ্রামাফোন পেরিয়ে ইউটিউব বা স্পটিফাইয়ের জমানায় এখন একই রকম ভাবে প্রাসঙ্গিক তিনি। বঙ্গ জীবনের প্রতিটি আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান। শৈলেশ দত্তগুপ্তর কাছে গানের তালিম নিয়েছিলেন তিনি, তবে তার গানের ছাঁচ প্রবাদপ্রতিম গায়ক পঙ্কজ মল্লিকের আদলে তৈরি হয়েছিল । শাস্ত্রীয় ঘরানায় নিজের পারদর্শিতা প্রমাণ করেছেন।

বাংলায় ১৯৪১ সালে মুক্তি পাওয়া নিমাই সন্ন্যাস সিনেমায় প্রথমবার গান রেকর্ড করেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। হিন্দির ক্ষেত্রে ১৯৪৪ সালে ইরাদা সিনেমার জন্য পণ্ডিত অমরনাথের সুরে প্রথমবার গান রেকর্ড করেন তিনি। অনুরাগীরা বলতেন রবীন্দ্রসংগীত আর উত্তম কুমার – এই দুটি যেন সমার্থক হয়ে গিয়েছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানের ভাষায়। বেসিক রেকর্ড হোক বা রুপোলি পর্দা।হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সুরের যে রোমান্টিকতা সৃষ্টি করেছিলেন তা শুধু বাংলার নয়, এ যেন এক আকাশ সুরের ভান্ডারে রয়ে গেছে আজীবন।









































































































































