বিয়ের মাত্র ১১ দিনের মাথায় স্ত্রী অভিযোগ দায়ের করেছেন রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীর বিরুদ্ধে।আর এর পর থেকেই বেপাত্তা বিধায়ক। বঙ্গ বিজেপির নেতারাও তার নাগাল পাচ্ছেন না।এই আবহে জানা গিয়েছে, সেই অভিযোগের মামলায় জামিন না পাওয়া পর্যন্ত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন না বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৭ জুন। বিঝায়কের বিরুদ্ধে স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী কলকাতার তিলজলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার পর থেকেই মুকুটমণির কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না! বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন মুকুটমণির বাবা এবং ভাইও।ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশ বিজেপি বিধায়ককে ডেকে তাঁর স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জেরার প্রস্তুতি শুরু করেছে।বিধায়ক বেপাত্তা হওয়ায় জেরার জন্য তাঁকে নোটিশ পাঠানোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। বিষয়টি মুকুটমণির ‘ব্যক্তিগত’ বলে প্রকাশ্যে জানালেও ঘটনাপ্রবাহে স্বভাবতই বেশ ‘অস্বস্তি’তে বঙ্গ বিজেপি।
জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে মুকুটমণির সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন বিজেপির এক রাজ্য নেতা।দলের তরফে তিনি বিধায়ককে এই বিষয়ে প্রকাশ্যে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলেছেন। তার পরেই মুকুটমণি নিজের অবস্থান দলের নেতাদের জানিয়েছেন। আরও জানা গিয়েছে, আদালত ওই মামলায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করলেই প্রকাশ্যে এসে স্ত্রীর অভিযোগ প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন বিজেপির চিকিৎসক-বিধায়ক। আপাতত সাংসদ, বিধায়কদের আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন মুকুটমণি।এরই পাশাপাশি, পৃথক ভাবে আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন তাঁর বাবা ও ভাই।বধূ নির্যাতনের অভিযোগের পাশাপাশি আনা হয়েছে তোলাবাজি, বিশ্বাসভঙ্গ, আটকে রাখা ও হুমকি দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও। মোট ৬টি ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর স্ত্রী স্বস্তিকা।
উল্লেখ্য, গত মে মাসের ২৮ তারিখে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন মুকুটমণি-স্বস্তিকা।মুকুটমণি ও তাঁর স্ত্রী পূর্বপরিচিত। গত ১৩ মার্চ তাঁরা একসঙ্গেই রেজিস্ট্রি বিয়ের আবেদন করেন। ২৮ মে দুই পরিবারের উপস্থিতিতে রেজিস্ট্রি বিয়ে সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটায় ‘অস্বস্তি’-তে পড়েছে রাজ্য বিজেপি। মুকুটমণি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পছন্দে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে রানাঘাট থেকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু স্বাস্থ্যভবন চাকরি থেকে তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করেনি। ফলে ভোটে দাঁড়ানো হয়নি মুকুটমণির।তার পরে অবশ্য বেশি দিন চাকরি করেননি মুকুটমণি। চলে আসেন সক্রিয় রাজনীতিতে।
মতুয়া সমাজ থেকে উঠে আসা এই যুবা রাজনীতিক ২০২১ সালে রানাঘাট দক্ষিণ থেকে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হন।এখন স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে আদৌ বিধায়ক ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে পারেন কিনা সেদিকেই তাকিয়ে সবাই। তবে পঞ্চায়েতের আগে এই ঘটনায় রীতিমতো অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি।