আদ্যাপীঠ মন্দিরে পুজো দিয়ে স্মৃতিমেদুর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি আদ্যাপীঠ মন্দিরে পুজো দেন। একইসঙ্গে মন্দির চত্বরে একটি অতিথিশালা এবং অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance) পরিষেবার উদ্বোধন করেন তিনি। এর পরেই অনুষ্ঠানে বলতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আদ্যাপীঠে এসে তিনি স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েছেন। আর সেই স্মৃতি জুড়ে রয়েছেন তাঁর মা গায়ত্রী দেবী।
সাড়ে ৩টে নাগাদ আদ্যাপীঠ মন্দিরে পৌঁছন মমতা। সেখানে গিয়ে পুজো দেন। নিজের হাতে আরতি করেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও। মমতা বলেন, “আজকে আমার আসাটা একটু অন্য রকম। বাড়িতে রোজই আদ্যাস্তব পাঠ করি আমি। আমি শিব, দুর্গা, কালী, লক্ষ্মী, শীতলা, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, আদ্যা মা, দক্ষিমা কালিকা মা, মা তারা সকলেরই পুজো করি। আমার একটি সিংহাসন রয়েছে। সেখানে ছোট্ট ছোট্ট সুন্দর মায়েরা রয়েছে আমার। মাতৃ এবং পিতৃদেবতাও আছেন।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি তখন রেলমন্ত্রী। তাঁর মা আদ্যাপীঠে পুজো দিতে আসতে চাওয়ায় তিনি একটি লাল পেড়ে শাড়ি তাঁকে কিনে দেন পুজো দেওয়ার জন্য। সেই শাড়ি নিয়ে ভোর চারটে থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা। সঙ্গে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বোন। তারপর পুরোহিতরা তাঁদেরকে জানান, আজ আর কোনও শাড়ি আসেনি। প্রতিমাকে গায়ত্রী দেবীর নিয়ে যাওয়া শাড়িই পরানো হয়। আদ্যামা-কে সেই শাড়িই পরানো হয়। “কিছু কিছু ঘটনা এমন ঘটে। মা আর বোন ভোর ৪টে থেকে এসে বসেছিলেন। অনেকে জিজ্ঞেস করেন, কাপড় এনেছেন কি না। মা কাপড়টা দেখান। আমরা মাকে ভাল শাড়ি দিই সাধারণত, যেমন বেনারসী। আদ্যাপীঠে অনেক ভাল শাড়ি আসে। কিন্তু অত কম দামি…কেউ আন্দাজ করতে পারেননি। সন্ধে হয়ে গেলেও মা বাড়ি না আসায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। পরে মা এসে বাকিটা বলল। মন্দিরে তাঁর মাকে বসতে বলা হয়। বলা হয়, প্রতিমাকে সাধারণত বেনারসি পরানো হয়। অনেক দামি শাড়ি আসবে। ভাল শাড়ি এলে যখন পরানো হবে, তখন শাড়িটা দিলে পুজোয় দেওয়া হবে। ভোর ৪টে থেকে বিকেল ৫টা বাজার পর এসে বলা হয়, একটাও শাড়ি আসেনি তখনও। সেই সময় পুরোহিত মশাই ওই শাড়িই নিয়ে গিয়ে প্রতিমাকে পরিয়ে দেন।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনা আজও কাঁটা দেয় তাঁকে। অনেকে বিশ্বাস করেন, অনেকে করেন না। এই কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি স্মৃতিমেধুর হয়ে পড়েছেন। একই সঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজে মন্দির আদ্যাপীঠ মন্দির কর্তৃপক্ষের অবদানের কথা স্মরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী।