সময় যত এগোচ্ছে ততই ভয়াবহ পরিস্থিতি মণিপুরে (Manipur)। জাতিদাঙ্গার জেরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে উত্তর পূর্বের পাহাড়ি এই অঞ্চলটিতে। আর মণিপুরের বর্তমান অবস্থা দেখে কার্যত শিউরে উঠছেন দেশবাসী। আর এমন অবস্থা মনে করিয়ে দিচ্ছে নয়ের দশকের জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) বীভৎস অধ্যায়ের। আর জম্মু ও কাশ্মীরের সেই ভয়াবহতার সেই ছবি স্পষ্ট করছে মণিপুর। জাতিদাঙ্গার জেরে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের (Kashmiri Pandit) মতোই মণিপুরে রিফিউজি (Refugee) তকমা পেয়েছেন কমপক্ষে ৫০ হাজার মণিপুরি বাসিন্দা।
রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মণিপুরের সাংসদ আর কে রঞ্জন জানান, হিংসার জেরে ঘর ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ। রাজ্যের ৩৪৯টি রিলিফ ক্যাম্পে (Relief Camp) ইতিমধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানান, জঙ্গিদের খোঁজে রাজ্যজুড়ে অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, অসম রাইফেলস, আধাসেনা ও রাজ্য পুলিশ। সম্প্রতি একাধিক জায়গায় চিরুনি তল্লাশি (Search Operation) চালিয়ে ৫৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৯টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া, দাঙ্গায় ঘরছাড়া পড়ুয়াদের শিক্ষার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যে একটি নকশা তৈরি হয়েছে। খুব শীঘ্রই তা ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
এদিকে, হিংসার জেরে ইতিমধ্যে মণিপুরে স্বাভাবিক জীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে জ্বালানি থেকে শুরু করে খাদ্যসামগ্রীর জোগান রীতিমতো ধাক্কা খেয়েছে। অন্যদিকে, পরিস্থিতি বুঝে দেদারে শুরু হয়েছে কালোবাজারির রমরমা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল নিশ্চিত করছে সেনা। অন্যদিকে, গত ৩ মে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ (Tribal Solidarity Merch) শুরু করে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (All Tribal Students Union of Manipur)। মেতেইদের তফসিলি উপজাতির তকমা না দেওয়ার দাবিতেই চলে এই মিছিল। ধীরে ধীরে তা হিংসাত্মক আকার নেয়। গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা।
এমন পরিস্থিতিতে, গত মাসেই দিল্লিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে ‘ওয়ার্ল্ড মেতেই কাউন্সিল’। তাদের দাবি, মণিপুরে যে সমস্ত হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে তা একেবারেই পূর্বপরিকল্পিত। বর্তমানে মেতেইদের দশা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মতোই। অথচ, নিজের রাজ্যেই গণহত্যার মুখে দাঁড়িয়ে মেতেই সম্প্রদায়ের মানুষজন।