আত্ম প্রচারে মগ্ন মোদি নিজের শৈশবের স্কুলকে শিশুদের ‘প্রেরণা’ হিসেবে গড়ে তুলছেন, নিজের নামে তৈরি করেছেন আস্ত স্টেডিয়াম এবার নিজের জন্মস্থানকে হিন্দুধর্মের পীঠস্থান হিসেবে দেখাতে কোমর বাধল বিজেপি(BJP) সরকার। সব মিলিয়ে নিজেকে ‘মনীষী’ প্রতিষ্ঠায় চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছেন না প্রধানমন্ত্রী(Narendra Modi)। মোদির জন্মভূমি গুজরাটের ভাদনগর(BhadNagar)। এই এলাকার ধর্মীয় মাহাত্ম্য, তার চরিত্র এবং পারলে ইতিহাসও বদলে ফেলতে প্রাণপণ চেষ্টা শুরু হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। পাশাপাশি ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় এই জনপদকে তোলার তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গেছে।

ভাদনগরকে ভারতের অন্যতম প্রাচীন ধর্ম, দর্শন ও সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কোমর বেধে মাঠে নেমেছে কেন্দ্র। বৌদ্ধ হেরিটেজ সার্কিটের অন্যতম করিডর হিসেবেই মেহসানা জেলার এই জনপদকে হেরিটেজ তালিকায় রাখা হয়েছে। প্রাচীন ভারতের ঐতিহ্যের অন্যতম আঁতুড় হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য এলাকাজুড়ে পুরাতাত্ত্বিক খননের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। আর এখানেই শেষ নয়, হিন্দুধর্মের পীঠস্থান হিসেবে ভাদনগরকে তুলে ধরার চেষ্টাও শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাশী ও ভাদনগরের মধ্যে প্রাচীন সম্পর্ক সন্ধানের প্রকল্প হাতে নিয়েছে কেন্দ্র। এই বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসবিদ, দার্শনিক ও পুরাতাত্ত্বিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে। তাদের গবেষণার বিষয় হল, প্রাচীন কাশী এবং প্রাচীন ভাদনগরের মধ্যে সম্পর্ক উদ্ঘাটন। প্রকল্পের নাম, ‘রিলেশনশিপ বিটুইন কাশী অ্যান্ড ভাদনগর সিন্স অ্যানসিয়েন্ট টাইমস’।
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক নাকি জানতে পেরেছে, ভাদনগর ছিল প্রাচীন যুগে বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। আড়াই হাজার বছর আগে কাশী ও ভাদনগরের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ছিল। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা সারনাথ থেকে ভাদনগর এসেছিলেন মথুরা এবং সাঁচী হয়ে। এমনকী ১২ বছর আগে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যে ভাদনগরে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত বৌদ্ধ মঠের সন্ধানও মিলেছে। সেই কারণে আরও একবার পুরাতাত্ত্বিক গবেষণার প্রয়োজন। অর্থাৎ কাশী থেকে ভাদনগর—বৌদ্ধ, হিন্দু, জৈন ধর্ম ও দর্শনের প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে এবার বই লেখা হবে। তৈরি হবে মিউজিয়ামও। এই প্রকল্প নিয়ে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং গুজরাত সরকারের সংস্কৃতি দফতরের। সবমিলিয়ে ২৪এর নির্বাচনের আগে মোদির গ্রামকে হাই প্রোফাইল জনপদ হিসেবে তুলে ধরতে তোড়জোড় চূড়ান্ত। আর এই গ্রামে জন্ম নেওয়া নরেন্দ্র মোদিকে ‘মনীষী’ হিসেবে তুলে ধরতে এখন থেকেই মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবির সুত্রের খবর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভাদনগরের নাম বদলে তা মোদি নগরও করা হতে পারে।














































































































































