ওড়িশার বালাসোরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ভেঙে, দুমড়ে, মুচড়ে গিয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। হতাহত সংখ্যা পেরিয়েছে তিনশো। আহত হাজারের বেশি। দুর্ঘটনা বা মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি কাম্য নয়, কিন্তু এমন ভয়াবহ ঘটনার দায় কী এড়াতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা রেলমন্ত্রক? বন্দে ভারতের কৃতিত্ব নিতে বড় বড় বিজ্ঞাপনে যদি প্রধানমন্ত্রী মোদির ছবি, তাহলে করমণ্ডলে দুর্ঘটনার দায়ও বর্তায় তাঁর উপর। এরই মাঝে সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরাগুলি চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে তৈরি মান্ধাতার আমলের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে লিঙ্ক হফম্যান বুশ বা LHB কামরা থাকলে ক্ষয়ক্ষতি কিংবা প্রাণহানির ঘটনা নিশ্চিতভাবে কম হতো। সাধারণ কামরার থেকে LHB কামরা অনেক বেশি উন্নত। LHB কামরার প্রধান বৈশিষ্ট্য , ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়লে তা পাল্টি খায় না। দু’টি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে সাধারণ কামরা সজোরে ছিটকে পড়ে এবং উল্টে যায়। কিন্তু, জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি LHB কামরার ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা নেই বললেই চলে। সঙ্গে থাকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি নিউম্যাটিক ব্রেক। ট্রেন তীব্র গতিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলেও, এর মাধ্যমে আচমকা গতিবেগ কমে যাওয়াকে অনেকটাই সামাল দেওয়া যায়। এই কামরা থাকলে ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় অনায়াসে ২০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। যেমন গতি বাড়ে দ্রুত, তেমনই কমতেও পারে।
২০০০ সাল থেকেই এই LHB কামরা ব্যবহার করছে ভারতীয় রেল। প্রথমে শতাব্দী এক্সপ্রেসের জন্য ২৪টি কামরা জার্মানি থেকে আনা হয়। পরবর্তী সময়ে সেই প্রযুক্তির ব্যবহার করে পাঞ্জাবের কাপুরথালার রেল কোচ কারখানা এই কামরা তৈরি করছে। শতাব্দী ও রাজধানী এক্সপ্রেস ছাড়াও LHB
কামরা ব্যবহার করা হচ্ছে আরও কিছু সুপারফাস্ট ট্রেনে। আর সেই জায়গা থেকেই প্রশ্ন, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের মতো এমন প্রথমসারির দুরপাল্লার ট্রেনে কেন লিঙ্ক হফম্যান বুশ বা LHB কামরা ব্যবহার করা হল না? এর দায় কী রেলমন্ত্রী নেবেন না?