লক্ষ্ণণ শেঠ। সিপিএম জমানায় একটা সময় হলদিয়া সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেতাজ বাদশা। প্রথমে বিধায়ক, তারপর টানা তিনবার তমলুকে সিপিএমের সাংসদ। নন্দীগ্রাম আন্দোলের সময় বিতর্কের শিরোনানে ছিলেন এই লক্ষ্ণণ শেঠ। এরপর হলদি নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। সিপিএমের এই প্রাক্তন দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অধুনা প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। রাজনীতি তাঁর রক্তে, রাজনীতি তাঁর নেশা, তাই আমৃত্যু রাজনীতির ময়দানেই থাকতে চান লক্ষ্ণণ শেঠ। আর রাজনৈতিক ভাবে তাঁর মূল শত্রু বিজেপি।
আজ, শুক্রবার কলকাতারপ্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন লক্ষ্ণণ শেঠ। তাঁর বিভিন্ন বক্তব্যের মাঝে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা দলবদলু বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বিস্ফোরক লক্ষ্ণণ শেঠ। শুভেন্দুকে নিশানা করে তিনি বলেন, “আমাকে শেষ করার জন্য শুভেন্দু অধিকারী প্রবলভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে, তবে সে একটা অকর্মণ্য। এখনও একটা খুনের কেসে আমায় রেখে দিয়েছে। তার বিচার হয়তো শুরু হবে।”
যে হলদিয়া শিল্পতালুক তাঁর হাত ধরে তিল তিল করে গড়ে উঠেছিল, সুতাহাটা গ্রাম থেকে যে হলদিয়াকে একটা সময় তিনি তিলোত্তমা বানিয়ে ছিলেন, সেই হলদিয়াকে পরবর্তী সময়ে লুটেপুটে খেয়েছে শুভেন্দু, শুধু হলদিয়া নয় গোটা পূর্ব মেদিনীপুরে তোলাবাজি করেছে এই শুভেন্দু। নিজেকেই পুলিশ প্রশাসন বানিয়ে রেখেছিল বলেও অভিযোগ করেন লক্ষ্ণণ শেঠ। হলদিয়ার অভিশাপের নাম শুভেন্দু। লক্ষ্ণণ শেঠের দাবি, “শুভেন্দু অধিকারীর আমলে এক ছটাক জমি অধিগ্রহণ হয়নি। আমি ল্যান্ড ব্যাংক করে গিয়েছিলাম। আমার অধিগৃহীত জমিগুলো ভুলভাল কাজে ব্যবহার হয়েছে। হলদিয়া থেকে উনি প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু প্রমাণ দিতে পারব না।”
এনিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “একটা সময় পর থেকে হলদিয়াকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তার তো সবটাই জানেন হলদিয়াবাসী। সেই হিসেবে লক্ষ্মণ শেঠ যদি শুভেন্দুকে এর জন্য দায়ী করেন, তাহলে তিনি তাঁর নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকেই বলছেন।”
এখানেই শেষ নয়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু কারচুপি করে জিতেছে বলেই দাবি করলেন লক্ষ্ণণ শেঠ। তিনি বলেন, “আমি নন্দীগ্রামকে খুব ভালো চিনি। ওখানে শুভেন্দু জিততেই পারে না। কারণ, নন্দীগ্রামের মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। টিভিতে দেখলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতে গিয়েছেন। তারপর হঠাৎ শুনলাম শুভেন্দু জিতেছে। আসলে আলো বন্ধ করে নন্দীগ্রামে ভোট গণনা হয়েছে। দরজা বন্ধ করে দশ-বিশ করা হয়েছে। দশকে বিশ করা হয়েছে। যে ভোটে শুভেন্দু জিতেছেন, তা বৈধ হয়নি।”