সমপ্রেমী বিবাহের স্বীকৃতি আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সরগরম গোটা দেশ। একের পর এক শুনানিতেও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বেঞ্চ এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। কিন্তু, ভালোবাসার টানে সেই সমস্ত আইন কানুনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বিয়ে করলেন মৌসুমী ও মৌমিতা। মহানগরী সাক্ষী থাকল এক সমপ্রেমী বিবাহের।
শহরের ভূতনাথ মন্দিরে রবিবার মধ্যরাতে চারহাত এক হল মৌসুমী দত্ত এবং মৌমিতা মজুমদারের। হলুদ পাঞ্জাবি এবং টোপড় পরে মন্দিরে বিয়ে করতে পৌঁছন বছর ১৯-এর মৌমিতা। কনের সাজে লাল বেনারসী পরে তাঁর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন মৌসুমী। আড়ম্বর ছিল না ঠিকই, তবে মৌসুমীর সিঁথি সিঁদূরে রাঙিয়ে দেন মৌমিতা। মালাবদলও করেন।
সমাজের চোখরাঙানি দূরে সরিয়ে রেখে মা কালীর সামনেই আজীবন একে অপরের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেন এই সমপ্রেমী যুগল।
জানা গিয়েছে, বনগাঁর বাসিন্দা বছর ১৯এর মৌমিতা মজুমদারের সঙ্গে কয়েকমাস আগেই ইনস্টাগ্রামে আলাপ হয় কলকাতার বছর ২৫-এর মৌসুমী দত্তর। নিয়মিত ফোনে এবং ফেসবুকে কথাবার্তা শুরু হয় তাঁদের। এরপর একদিন হঠাৎ করেই মৌসুমীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন মৌমিতা।
তিনি জানিয়েছেন, সমাজ কী ভাববে তা ভাবিনি। মৌসুমীকে ভালোবাসতাম আর সেটাই ওকে বলেছিলাম। দু’জনেই এরপর সিদ্ধান্ত নিই বিয়ে করব। তাই আমি কলকাতায় এসেছি। সমপ্রেমী বিয়ে নিয়ে কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না। যতদিন বাঁচব মৌসুমীকে বুকে আগলে রাখব।
মৌসুমী দত্ত জানান, ভালোবেসে বিয়ে করেছি আমরা। আইন স্বীকৃতি না দিলেও একসঙ্গেই থাকব। যদি আদালত লিভ ইন রিলেশনকে স্বীকৃতি দিতে পারে, তবে সমপ্রেমীদের বিয়ের অনুমতি কেন মিলবে না?
জানা গিয়েছে, অল্পবয়সে বিয়ে হয়েছিল মৌসুমীর। তিনি ডিভোর্সি। তাঁর ১১ এবং সাত বছরের দুই সন্তানও রয়েছে। মৌসুমী বলেন, দুই সন্তানের দায়িত্ব আমারই। আমার বাপের বাড়িতে ওরা মানুষ হচ্ছে।
পরিবার না মানলেও সামাজিক ছুৎমার্গ এড়িয়ে একে অপরকে ছেড়ে যাবেন না তাঁরা, এমনই অঙ্গীকার সমপ্রেমী যুগলের।







































































































































