রোগীর (Patient) ছুরির আঘাতে এক চিকিৎসকের (Doctor) মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কেরল (Kerala)। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে সরব চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)। ইতিমধ্যে, রাজ্য জুড়ে হাসপাতালগুলিতে ধর্মঘটের (Strike) ডাক দিয়েছে তাঁরা। আর চিকিৎসক সংগঠনের এমন পদক্ষেপেরে জেরেই কেরালা জুড়ে বিঘ্নিত হয়েছে চিকিৎসা পরিষেবা। বুধবার সকালের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, কেরলের কোল্লম জেলার কোট্টারাকরা সরকারি তালুক হাসপাতালে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে, মৃত চিকিৎসকের নামে বন্দনা দাস (Bandana Das)। তিনি সরকারি ওই হাসপাতালের হাউস সার্জন (House Surgeon) ছিলেন। ২৩ বছর বয়সী ওই চিকিৎসকের কেরলের কোট্টায়ামের বাসিন্দা। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষককে (Teacher) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম সন্দীপ নেদুমপাড়া। তিনি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। বুধবার হাসপাতালে অভিযুক্ত যুবককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। অভিযোগ, ওই যুবক নিজের পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বচসা এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। আর তাতেই গুরুতর আহত হন। তাঁকে সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। কিন্তু হাসপাতালে এসে আরও ভয়ানক কাণ্ড ঘটালেন অভিযুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের পায়ের ক্ষতে যখন ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছিলেন চিকিৎসক, ঠিক তখনই রোগী ক্ষেপে যান। হাতের সামনে যা পান, তা দিয়েই সকলের দিকে ছুঁড়তে শুরু করেন। এরপর হাতের সামনে কাঁচি এবং অপারেশনে ব্যবহৃত ছুরি হাতে চিকিৎসককে আক্রমণ করেন যুবক। ছুরির আঘাতে জখম হন চিকিৎসক। পাশাপাশি এক পুলিশকর্মীর আঘাত লাগে। এদিকে ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে তিরুঅনন্তপুরমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসককে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁর শেষরক্ষা হয়নি।
তবে পুলিশের সমানে রোগীর হাতে চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে কেরলে। মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (Pinarai Vijayan) ও রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান (Arif Mohammed Khan)। এক বিবৃতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, মর্মান্তিক এবং অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ঘটনার দ্রুত তদন্ত হবে। চিকিৎসাকের উপর হামলার ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করবে সরকার। এদিকে চিকিৎসকের মৃত্যুর প্রতিবাদে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এবং কেরল গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (KGMOA) বুধবার ২৪ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসক খুনের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করেছে কেরল হাই কোর্ট (Kerala High Court)। বিচারপতি দেবন রামচন্দ্রণ এবং বিচারপতি কৌসের এদাপ্পাগাথের ডিভিশন বেঞ্চ ঘটনার আকস্মিকতায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে এবং পুলিশের কাছে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। এদিকে চিকিৎসক খুনের ঘটনায় প্রতিবাদ মিছিল করেন কোট্টারাকরা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মীরাও।