যোগীরাজ্যে (Uttar Pradesh) এবার বড় সাফল্য মুসলিম (Muslim) পরিবারের সন্তানের। ‘মাধ্যমিক সংস্কৃত শিক্ষা পরিষদ বোর্ড’-এর পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারি ওই কিশোরের নাম মহম্মদ ইরফান (Md Irfan)। প্রায় ১৪ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮২.৭১ শতাংশ নম্বর পেয়ে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে সে। সংস্কৃত বোর্ডে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সংস্কৃত ভাষা (Sanskrit) ও সাহিত্য (Literature) এই দু’টি বিষয়ে পড়াশোনা করা এবং পাশ করা বাধ্যতামূলক। আর দু’টি বিষয়েই সে ভাল নম্বর পেয়েছে। তাঁর লক্ষ্য এবার সংস্কৃততে শাস্ত্রী (Graduation) এবং আচার্য (Post Graduation) পর্যন্ত পড়াশুনো চালিয়ে শিক্ষকতায় যুক্ত হওয়া। তবে এমন ভালো ফলাফলের পর ইরফানের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। যোগীরাজ্যে মুসলিম পরিবারের সন্তানের এমন সাফল্যের পরও কীভাবে সে আগামীদিনে এগিয়ে যাবে বা সরকারি সাহায্য পাবে কী না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
উত্তরপ্রদেশের চান্দৌলি জেলার বাসিন্দা ইরফান। সেখানকার সম্পূর্ণনানন্দ সরকারি সংস্কৃত বিদ্যালয়ের ছাত্র সে। সংস্কৃততে সেরা নম্বর পাওয়ার পাশাপাশি বোর্ডের প্রথম ২০ জন পরীক্ষার্থীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। তবে অন্যান্য বিষয়েও বেশ আকর্ষণীয় নম্বর পেয়েছে এই কিশোর। তবে আশ্চর্যজনকভাবে সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টাতেই এই ফল করেছে ইরফান। কারণ তাঁর পরিবারের পক্ষে কোনওমতেই প্রাইভেট টিউটর রাখা সম্ভব ছিল না। বছর সতেরোর ইরফানের বাবা সালাউদ্দিন পেশায় ক্ষেতমজুর। এদিকে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর ইরফান জানিয়েছে, বড় হয়ে সংস্কৃতের শিক্ষক হতে চায় সে। তবে এই প্রথম নয়, সংস্কৃত বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষাতেও ভাল ফল করেছিল ইরফান। সেই একমাত্র মুসলিম পড়ুয়া, যে সংস্কৃত বোর্ডের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় প্রথম কুড়ি জনের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে সে।
এদিকে ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা জানান, ইরফান সব সময়ই পড়াশোনায় ভালো ছিল এবং প্রথম থেকেই সংস্কৃত ভাষার প্রতি তার গভীর আগ্রহ তৈরি হয়। ইরফানের বাবা আরও জানান, পড়াশোনার প্রতি ইরফানের এতটাই ঝোঁক ছিল যে, সে অন্য কিছু নিয়ে ভাবতই না। কখনই কোনও কিছু নিয়ে অভিযোগ করেনি সে। তবে এদিন সালাউদ্দিন মনে করিয়ে দেন, ভাষার আবার ধর্ম কী! আমি জানি না, কী ভাবে মানুষ ভাষা এবং ধর্মের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পায়! একজন হিন্দু উর্দুতে খুব ভাল হতে পারেন। আবার এক জন মুসলিম সংস্কৃতে পারদর্শী হতে পারেন। তবে আমরা ইরফানকে কখনওই কিছুতে বাধা দিইনি। সে সংস্কৃত ভাষায় সুন্দর ভাবে কথা বলতে এবং লিখতে পারে। সম্পূর্ণ নিষ্ঠা এবং কঠোর পরিশ্রমের জন্যই সে ১৩ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হয়েছে।