সোমনাথ বিশ্বাস
সিপিএম মানেই সন্ত্রাস। সিপিএম মানেই অত্যাচার। সিপিএম মানেই হত্যা। সিপিএম মানেই গণহত্যা। সিপিএম মানেই গোখরো-কেউকে, সুযোগ বিষ ছোবল মারার পৈশাচিক প্রচেষ্টা। সিপিএম মানেই সাঁইবাড়ি থেকে শুরু করে মরিচঝাঁপি, বিজন সেতু, বানতলা, ধানতলা, ছোটো আঙাড়িয়া, সূচপুর, কেশপুর, নন্দীগ্রাম, খেজুরি, আমতা, সিঙ্গুরের মতো হাজারো বর্বরোচিত ঘটনা বাংলার বুকে। তারই মধ্যে অন্যতম আজ থেকে ২০ বছর আগে হাড়হিম করে দেওয়া দমদমের জোড়া খুন। বামেদের ৩৪ বছরের অপশাসনে সিপিএম হার্মাদদের সেই ভয়ঙ্কর, বীভৎসরূপ, আজও ভুলতে পারেনি শান্তিপ্রিয় বাংলার মানুষ। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। সিপিএমের রক্তাক্ত হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে বাংলা। বঙ্গবাসীর অভিশাপে সিপিএম আজ শূন্য, কিন্তু তাতেও শিক্ষা নেই। একেবারে পাল্টায়নি সিপিএম। সুযোগ পেলে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে এই রাজনৈতিক দলটি, ফের তার জলজ্যান্ত উদাহরণ পাওয়া গেল পয়লা মে শ্রমিক দিবসে। আলিমুদ্দিনের প্রচ্ছন্ন মদতে
দমদম জোড়া খুনের খলনায়ক হার্মাদ দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাঠে নামিয়ে সেটাই প্রমাণ করলেন মহম্মদ সেলিমরা।
বাম জমানাতেই জোড়া খুন মামলায় একসময় যাবজ্জীবন সাজা খেটেছিলেন এই বাহুবলী দুলাল। সন্ত্রাস কায়েম করতে দমদমের সেই খুনি হার্মাদ দুলালকে ফের সক্রিয় করছে সিপিএম। আগেই জানা গিয়েছিল, দীর্ঘ ২০ বছর পর তাঁকে ফেরানো হচ্ছে দলে। ফেরানো হতে পারে তাঁর সদস্যপদ। কিছুদিন আগে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন খোদ দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিউনিস্ট পার্টি এবং বামপন্থী আদর্শ থেকে তিনি কখনই দূরে চলে যাননি বলেও মন্তব্য করেন। এটাই কী কমিউনিস্ট পার্টি এবং বামপন্থী আদর্শ? আজ, কাশীপুরে পার্টি অফিস পুনরফখল করার নামে যে ঘটনা ঘটালেন দুলাল, তাতেই স্পষ্ট এতটুকু বদলায়নি সিপিএম। অর্থাৎ, সুযোগ পেলেই কাল কেউটের মতো ছোবল মারতে পিছপা হবে না এই সিপিএম।
বাম জমানায় সিপিএমের সম্পদ তপন-সুকুর, মজিদ মাস্টার, সুশান্ত ঘোষদের মতোই ভয়ঙ্কর উন্মত্ত এক হার্মাদের
নাম দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। দমদম, কাশীপুরে, উত্তর শহরতলীর ত্রাস এই দুলাল। ২০০২ সালের ৪ মার্চ। দমদমে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। সেই ঘটনায় ১১ এপ্রিল গ্রেফতার হয়েছিল দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্দেশেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কারণ, প্রমাণ এতটাই অকাট্য ছিল যে, সিপিএম চাইলেও তাঁকে আইনের শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারেনি। এরপর ২০০৩ সালের ২৯ অগাস্ট যাবজ্জীবনের সাজা হয় তাঁর। তার পরই তাঁর সদস্যপদ কেড়ে নেওয়া হয় খবর পাওয়া গিয়েছিল। তবে ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। এক দশকেরও বেশি জেলবন্দি থাকার পরও সিপিএমের মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন দুলাল।
দুলাল প্রসঙ্গে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিকে সম্প্রতি বলেন, “আমরা তো আগেই বলেছিলাম যাঁরা দূরে সরে গিয়েছেন তাঁদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা কবর। আর যাঁরা মানসিক ভাবে ভাবে দলের কাছে আছেন, তাঁরা তো আছেনই।” চমৎকার। এরপর থেকেই দ্রুত পার্টির সদস্য পদ ফিরে পেতে এবং মহম্মদ সেলিমদের গুড বুকে নাম তুলতে তৎপরতা শুরু করে দুলাল। আজ, পয়লা মে অতিসক্রিয়তা দেখালেন জোড়া খুনে জেলখাটা আসামি দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পুরোনো মেজাজে বহিরাগত গুণ্ডাদের নিয়ে এসে পার্টি অফিস দখলের চেষ্টা। যদিও স্থানীয় মানুষের বাধা পেয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে বাহুবলী দুলাল। কিন্তু সুযোগ পেলে ছোবল মারতে ছাড়বে না। কারণ, সিপিএম হার্মাদদের মজ্জায় মজ্জায় সন্ত্রাস।