শততম পর্বে ফেটে গেলো প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’-এর ফানুস। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান কোটি কোটি ভারতীয়ের মনের কথার প্রতিফলন বলেই ব্যাখ্যা করেন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)৷ কিন্তু, সেই ‘মন কি বাত’-এর অংশ হয়েও শততম পর্বে ব্রাত্যই থাকলেন বঙ্গ সন্তান সইদুল লস্কর (Saidul Laskar)।
রবিবার রাজভবনে ‘মন কি বাত’-র অনুষ্ঠানে হাজির থেকেও রাজ্যপালের সম্মান প্রত্যাখ্যান করে যোগ্য জবাবও দিয়ে দিলেন ট্যাক্সি চালক থেকে লড়াই করে হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা হয়ে ওঠা দক্ষিণ ২৪ পরগনার সইদুল লস্কর। এদিন দেশের ২২টি ভাষায় এবং একাধিক বিদেশি ভাষাতেও সম্প্রচারিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান ৷ কলকাতার রাজভবনেও এদিন শততম পর্ব উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমন্ত্রিত হয়ে হাজির ছিলেন সইদুলও। কিন্তু কাশ্মীরের মনজুর, হরিয়ানার সুনীলরা স্থান পেলেও বাংলার সইদুল লস্করের লড়াইয়ের কাহিনী স্থান পায়নি প্রধানমন্ত্রীর মনের কথায়। আর তা নিয়েই প্রবল মনোকষ্টে অনুষ্ঠান শেষে রাজ্যপালের হাত থেকে সম্মান নিতে অস্বীকার করেন সইদুল। রাজভবনে দাঁড়িয়ে সইদুল বলেন, “৫০ তম মন কি বাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমার লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন। এরপর প্রজেক্ট নিয়ে দিল্লিতে যেতে বলা হয়েছিল। দিল্লিতে গেলাম, হোটেলে থাকলাম। ঘুরে চলে এলাম৷ কারও সঙ্গে দেখা হল না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা হয়নি। কথাও হয়নি কোনও।”
সইদুলের আরও দাবি, দিল্লি থেকে ফিরে আসার পর ১০০তম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় তাঁকে। তিনি বলেন, “ভেবেছিলাম আজকের স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে আমার লড়াইয়ের কাহিনী তুলে ধরা হবে। কিন্তু তা হল না। বাংলার কারও কথাই তুলে ধরা হয়নি। অথচ বাংলার রাজভবনে অনুষ্ঠান হচ্ছে। যখন আমার কাহিনী দেখলাম না, আমার খুব কষ্ট হয়েছে। আমি অত্যন্ত আবেগপ্রবণ মানুষ৷ তাই আমি রাজ্যপালের হাত থেকে সম্মান গ্রহণ করিনি।”
সইদুল লস্কর আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুরের পুড়িগ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ট্যাক্সি চালক। ট্যাক্সি চালিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি পুড়িগ্রামে একটি হাসপাতালও পরিচালনা করেন তিনি। যে হাসপাতালে ওই গ্রামের বাসিন্দা-সহ আশপাশের বহু মানুষ চিকিৎসা করাতে আসেন এবং বিনা পয়সায় তাদের ওষুধও দেওয়া হয়। শুধু মুখের কথা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রকৃত সাহায্য পেলে আগামী দিনে হাসপাতালকে আরও বড় করে তুলতে পারতেন বলে আক্ষেপ সইদুলের।
আরও পড়ুন- পুরনো গাড়ি বিক্রির জন্য নয়া নিয়ম আনছে পরিবহণ দফতর, বাড়বে রাজস্বও