কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguli) এজলাসে যেসব মামলার শুনানি ছিল, তার মধ্যে ২টি মামলা আপাতত শুনবেন না তিনি- একটি প্রাথমিক TET সংক্রান্ত মামলা, অন্যটি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয় নিয়ে রমেশ মালিকের দায়ের করা মামলা। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) এই নির্দেশের পরেই শীর্ষ আদালতের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছ থেকে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারের অনুবাদ এবং রেজিস্ট্রার জেনারেলের হলফনামার কপি চেয়ে পাঠান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি এএস বোপান্না এবং বিচারপতি হিমা কোহলির স্পেশাল বেঞ্চ নথি চাওয়ার নির্দেশেও স্থগিতাদেশ দেয়। শুক্রবার রাতে কলকাতা হাই কোর্টে নিজেক চেম্বারে থেকে বেরিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেন, তা নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়। তাঁর কথায়, “আমার এজলাসে যে মামলা ৬ মাসে হচ্ছিল, সেটা অন্য কোথাও ৬০ বছর লাগলে কিছু বলার নেই। সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে বলার কিছু নেই, শুধু বলব সুপ্রিম কোর্ট যুগ যুগ জিও।” শুধু তাই নয়, তাঁর মনে হয়েছে, আরও যেসব দুর্নীতির মামলা আছে, তাও একই গ্রাউন্ডে তাঁর হাত থেকে সরে যাবে। তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিশিষ্ট আইনজীবীরাও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নিয়ে নিজেদের মত জানিয়েছেন।
“সুপ্রিমকোর্ট যুগ যুগ জিও“ বলাটা যুক্তিযুক্ত নয়
শীর্ষেন্দু সিংহ রায়: সব মামলা চালার একটি সময়সীমা থাকে। কোনও মামলা ৬০দিন চলে, ৬ মাস, ৬ দিন চলতে পারে। বিচারের জন্য কিছুটা সময় তো লাগেই। তবে, এই ডিজিটাল যুগে সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। কারণ, যে কোনও তথ্য খুব সহজে ও কম সময় হাতে পাওয়া যায়। সেই কারণে তাড়াতাড়ি মামলা নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। না হলে, সেটা অনেকের পক্ষেই ক্ষতিকর। তবে, “সুপ্রিমকোর্ট যুগ যুগ জিও“ বলাটা একজন বিচারপতির পক্ষে যুক্তিযুক্ত নয়। আমরা সবাই সুপ্রিম কোর্ট, হাই কোর্টের উপর আস্থা রাখি।
“যুগ যুগ জিও” বলাটা আরও একটি এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ
বিশ্বজিৎ দেব: সুপ্রিম কোর্ট সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। সেই কারণে সুপ্রিম কোর্টকে ওভাবে “যুগ যুগ জিও” বলাটা আরও একটি এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আর একটি মামলা সরলে, আরও সেই সংক্রান্ত মামলা সরে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। সুতরাং, অন্যান্য় নিয়োগ দুর্নীতি মামলাও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আর “যে মামলা ৬ মাসে হচ্ছিল, সেটা অন্য কোথাও ৬০ বছর লাগলে কিছু বলার নেই”- এই কথা বলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ‘ব্রাদার জাজেস’দের ছোট করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
উনি সাধারণ মানুষের আবেগকে গুরুত্ব দিয়েছেন
জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়- এটা ওনার ওভার এন্থুসিয়াজিম। উনি সাধারণ মানুষের আবেগকে গুরুত্ব দিয়েছেন। একজন বিচারপতি কখনই অন্য বিচারপতিদের অবজ্ঞা করবেন না। আইন হল সাধারণ মানুষের জন্য, আইনের জন্য সাধারণ মানুষ নয়। উনি নিজে এগিয়ে এসে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। উনি সাধারণ মানুষের আবেগকে প্রাধান্য দিয়ে ওনার মামলার করার প্রতি তীব্র আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।