নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের আদালতে মুখ পুড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-র। শনিবার মামলার শুনানি চলাকালীন তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে সিবিআইকে চরম ভর্ৎসনা করেন বিচারক। তিনি তদন্তকারী আধিকারিককে সাফ জানান, আমি আজ কিছু বলব না, যা বলার আমার কলম বলবে, দুটি মামলা ছাড়া নিয়োগ দুর্নীতির অন্যান্য মামলার অগ্রগতি অত্যন্ত হতাশাজনক। পাশাপাশি সিবিআই-র আইনজীবীকে বিচারক সাফ জানিয়ে দেন, তদন্ত ঠিকমতো চলছে না। প্রসেসের অজুহাত দিয়ে আর কতদিন অভিযুক্তদের আটকে রাখবেন? দ্রুত ইতিবাচক পদক্ষেপ করুন। আগামী ২১ দিনের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি দেখানোর নির্দেশ আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের।

শনিবার আলিপুর আদালতে জীবনকৃষ্ণ সাহা, কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষকে পেশ করে সিবিআই। এদিন বিচারকের উদ্দেশে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, আবেদন আছে। সরকারি আধিকারিকদের নাম আছে। তখন বিচারক বলেন, কাদের নাম আছে জানি না। ডেভেলপমেন্ট কী আছে? বিশ্বাসযোগ্যতা রেখে তদন্তে এগোতে হবে। পাশাপাশি এদিন বিচারক প্রশ্ন তোলেন, নীলাদ্রি ঘোষের পর থেকে শুধু আবেদন আর আবেদন! কোনও ডেভেলপমেন্ট হয়নি। আমি কি আপনাদের প্রোটেক্ট করার জন্য আছি? পাশাপাশি এদিন মামলা চলাকালীন বিচারক জানতে চান, কেস অনুযায়ী ৩ জন আছে। নীলাদ্রি টাকা নিয়ে কুন্তল বা তাপস কে দিয়েছে। যাদের থেকে টাকা নিয়েছে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, জিনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছেন সেই সরকারি আধিকারিকের একজনের নাম বলা হয়েছে। কিন্তু এরপর কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? দ্রুত তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করুন।
তবে এদিন বেলা ১১টা নাগাদ কুন্তলকে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়ে যাওয়া হলে সাংবাদিকরা জানতে চান, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে তাঁর মতামত কী। তবে এদিন কোনও কথা না বলেই আদালত ভবনের ঢুকে যান তিনি। অন্যদিকে, শনিবার তাপস মণ্ডলকেও হাজির করানো হয়েছিল আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। ঢোকার পথে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রসঙ্গে। সেই সময় গাড়ি থেকে নামতে নামতে তাপস বলেছিলেন, বিচারব্যবস্থা এবং তদন্তকারী সংস্থার উপর সম্পূর্ণ ভরসা আছে। আশা করি সঠিক তদন্ত হবে। তবে আদালত থেকে বেরোনোর সময় আবার সংবাদমাধ্যম তাপসকে প্রশ্ন করে কুন্তল ঘোষের মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কী বলবেন? তাপস বলেন, এই ব্যাপারে কিছু বলব না। এতে আমার মনে হয়েছে মামলাটা যেন পিছিয়ে যাচ্ছে। ত্বরান্বিত হচ্ছিল, পিছিয়ে যাচ্ছে। শ্রদ্ধেয় বিচারপতি সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই।
এদিকে, শনিবার সকালে নিজাম প্যালেস থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘দল অবশ্যই পাশে আছে, যখন অন্যায় করিনি তখন কেন পাশে থাকবে না! প্রমাণিত হয়েছে কি যে আমি জড়িত আছি? আগে প্রমাণিত হোক।’ তবে এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, আমাদের দল কোনওমতেই দুর্নীতি বরদাস্ত করবে না। যে যে ক্ষেত্রে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, সে ক্ষেত্রে দল কাউকে রেয়াত করেনি, সে মন্ত্রীই হোক বা দলের অন্য কোনও নেতা। কিন্তু সিবিআই তদন্ত করতে না পেরে বিধায়কদের সামাজিকভাবে অপদস্থ করছে। এটা তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। আদালতও ভর্ৎসনা করেছে।
আরও পড়ুন- জঙ্গিপুরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সকলকে একজোট হয়ে কাজের বার্তা ফিরহাদের




































































































































