মুখেন মারিতং জগৎ! কাজের নামে লবডঙ্কা! নিজের দত্তক নেওয়া গ্রামে গিয়ে মহিলাদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে ঘিরে ধরে মহিলারা বললেন, “আমরাই তো আপনাদের ভোট দিয়ে এমপি, এমএলএ করেছি। পাঁচ বছর আগে আমাদের গ্রাম দত্তক নিয়ে কী কাজ করেছেন? রাস্তা নেই, জল নেই। আপনি যখন আমাদের গ্রামকে পোষ্যপুত্র হিসেবে দত্তক নিয়েছেন, তখন উন্নয়নের দায়িত্ব নিতেই হবে। নাহলে আপনাকে ত্যাজ্যপিতা করে দেব।” নিজের দত্তক নেওয়া চকরাম প্রসাদ গ্রামে গিয়ে মহিলাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে কার্যত ”ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি” অবস্থা বিজেপির রাজ্য সভাপতির।বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যেই সীমান্তবর্তী এই চকরাম প্রসাদ গ্রাম। এই গ্রামের যুবক চুড়কা মুর্মুকে নিয়ে রয়েছে একাত্তরের যুদ্ধের নানা ইতিহাস। ১৯৭১ সালের পাকিস্তানি খান সেনাদের গুলিতে শহিদ হয়েছিলেন চুড়কা মুর্মু। যদিও কয়েক দশক পেরিয়ে গিয়েও শহিদের স্মৃতি বিজড়িত গ্রামের কোনও উন্নয়ন হয়নি। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে জেতার পর এই ঐতিহাসিক গ্রামকে দত্তক নিয়েছিলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।
আরও পড়ুন:বাস ভাঙচুর, জোর করে বন্ধ বাজার! বনধ সফল করতে মরিয়া বিজেপি
কিন্তু ওই পর্যন্তই। গত চার বছরে দত্তক নেওয়া গ্রামের দিকে ফিরে তাকাননি সুকান্ত। বদলায়নি দুর্দশার চিত্র। গ্রামে ঢোকার দেড় কিলোমিটার বেহাল রাস্তা। পানীয় জলের ট্যাপ আছে,জল নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে সবকিছুতেই পিছিয়ে শহিদের গ্রাম। সাংসদকে বহুবার বলেও কাজ হয়নি।
ফের ভোট আসছে। গ্রামে আসছেন সাংসদ। আচমকা গ্রামবাসীরা সাংসদকে সামনে পেয়েই ক্ষোভ উগরে দিলেন।রাস্তা ও পানীয় জল নিয়ে সুকান্ত মজুমদার ও বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর সামনেই বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।মহিলারা সরাসরি সাংসদকে ঘিরে নানা প্রশ্ন করে ব্যতিব্যস্ত করে দেন। “যখন পারবেন না, তখন দায়িত্ব নিলেন কেন…?” উত্তর ছিল না সুকান্তর মুখে।
স্থানীয় এক মহিলা বললেন, “রাজনীতি বুঝি না। দীর্ঘদিন রাস্তা ও পানীয় জল নিয়ে সমস্যায় ভুগছি। উনি (সুকান্ত মজুমদার) বড়াই করে আমাদের গ্রাম দত্তক নিলেও কোনও লাভ হয়নি। ভোটে জেতার পর কোনওদিন ফিরেও তাকাননি। এখন আবার ভোট আসতেই আমাদের কথা মনে পড়েছে। রাস্তা ও জলের সমস্যা না মিটলে পঞ্চায়েতে ভোট দেব না।” গ্রামের আরেক মহিলা বলেন, “সাংসদ বলেছেন এগুলি তাঁর হাতে নেই। তাহলে কোথায় যাব? হাতে যখন নেই তখন বড় বড় কথা বলে দত্তক নিয়েছিলেন কেন?”