মানুষের প্রার্থী মানুষ ঠিক করবে। অতীতের চিরাচরিত ধারা মুছে ফেলতে পঞ্চায়েতের(Panchayet) আগে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন তৃণমূলের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhisekh Banerjee)। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে বুধবার কোচবিহার উত্তরে জনসভায় গিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে(Nisith Pramanik) চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি জানালেন, পঞ্চায়েত মানে দুর্নীতি পঞ্চায়েত মানে গা-জোয়ারি ১৯৭২ সাল থেকে চলা এই প্রথা ভাঙতে এসেছি আজ।
এদিনের জনসভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “এতদিন নিয়ম ছিল প্রার্থী ঠিক করতে দলগতভাবে একটা সুপারিস পাঠানো হয় জেলা থেকে। রাজ্যকমিটি বন্ধ ঘরে বসে সিদ্ধান্ত নেয় কে প্রার্থী হবে। আমরা একধাপ এগিয়ে আপনাদের কাছে এসেছি। প্রার্থী কে হবে সে সিদ্ধান্ত আপনারা নেবেন। আমরা চাই আপনাদের পঞ্চায়েত প্রার্থী আপনারা ঠিক করুন। যারা ভোট দিতে পারবেন দেবেন, যারা পারবেন না তারা ফোন করুন 7887778877 নম্বরে।” একইসঙ্গে অভিষেক বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে একটা প্রথা চলে পঞ্চায়েত মানে দুর্নীতি, পঞ্চায়েত মানে গাজোয়ারি অতীতের এই প্রথা ভাঙতেই আজ আপনাদের কাছে এসেছি আমি। তবে অভিষেক একা কিছু করতে পারবে না। আপনাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তবেই তৈরি হবে প্রগতিশীল পঞ্চায়েত।”
এছাড়াও এদিনের জনসভা থেকে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমন শানান ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, “২০১৯ সালের পাকা ছাদ, গ্যাসের দাম, তেলের দাম এর ভিত্তিতে ভোট হয়নি। ধর্মের ভিত্তিতে রাম মন্দিরের ভিত্তিতে হয়েছিল। ধর্মের নাম ভোট বলেই দেশের দিকে দিকে আজ ধর্মীয় নৈরাজ্য তৈরি হচ্ছে, রাম নবমীতে অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যাচ্ছে। আপনারা অনেক আশা নিয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন ওরা বলেছিল ২ কোটি চাকরি দেবে। ১৫ লক্ষ করে টাকা দেবে। কিছু দেয়নি। বিজেপি ক্ষমতায় আছে আজ ৯ বছর হয়ে গেছে। ৯ বছরে কোচবিহারের মানুষের স্বার্থে একটা পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন এখানকার সাংসদ? একটা প্রকল্প এখানের মানুষের স্বার্থে করেছেন? আমি চ্যালেঞ্জ করছি একটা প্রমাণ দিন। যদি দিতে পারেন আমি এই প্রচার বন্ধ করে দেব।”
পাশাপাশি তিনি আর যোগ করেন, “২১ সালে লক্ষ্মীর ভান্ডার, পাকা রাস্তা, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ভিত্তিতে ভোট হয়েছিল। আপনারা তা সব পেয়েছেন। অন্যদিকে বাংলায় এরা হেরেছে বলেই মানুষের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। ধর্মের নামে যারা বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন দেখুন আপনাদের টাকা আটকে রেখেছে। ২.৬৫ লক্ষ মানুষ ১০০ দিনের কাজে যুক্ত তাঁদের প্রাপ্য ৭০০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার লোকের লিস্ট পাকা বাড়ির জন্য কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে। ৬ মাস হয়ে গেছে এখনও আটকে রেখেছে। বালাকোট ও পুলওয়ামা নিয়ে যারা ভোট দিয়েছিলেন তারা দেখবেন সত্যপাল মালিক কি বলেছেন। এই মোদি সরকারের জন্য ৪০ জওয়ান মারা গেছে, তাঁদের মৃত্যু নিয়ে এরা ভোট চেয়েছে।”
পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, যারা আগামী দিনে দিল্লির শক্তির দিকে আঙুল তুলে দাবি আদায় করার ক্ষমতা রাখতে পারে, সেই নির্ভীক সাহসী ব্যক্তিদের নাম পাঠান আপনারা। তাকেই প্রার্থী করা হবে। ১০০ দিনের বকেয়া আদায়ে আপনারা গিরিরাজকে চিঠি লিখুন ২ মাস সময় দিচ্ছি, ১ কোটি চিঠি নিয়ে দিল্লির বুকে আন্দোলন গড়ে তুলব। দরকার পড়লে অনির্দিষ্ট কালের জন্য দিল্লিতে আন্দোলন, অবস্থান করব।”