দেশ যতই এগিয়ে যাক না কেন বিজেপি (BJP) শাসিত মধ্যপ্রদেশ যে এখনও মধ্যযুগীয় মানসিকতাতেই বিশ্বাস করে তার প্রমাণ ফের মিলল। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান (Shivraj Singh Chauhan) গণবিবাহ প্রকল্পের (mass marriage ceremony organized by the government in the BJP-ruled state) সূচনা করেছিলেন। লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির তরুণ তরুণীদের একসঙ্গে করে বিয়ের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার। আর সেই গণবিবাহের আসরে মহিলাদের অপমান করার মতো নিন্দনীয় ঘটনা ঘটল। বিবাহবাসরে কনেরা অন্তঃসত্ত্বা (Pregnant) কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হল। এখানেই শেষ নয় যাঁদের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে তাঁদের বিয়ে বাতিল করে দেওয়ার মতো মারাত্মক কাণ্ড বিজেপি শাসিত রাজ্যে সরকার আয়োজিত গণবিবাহ অনুষ্ঠানে (mass marriage ceremony)। এরপরই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ডিন্ডোরী জেলার গাড়াসরই গ্রামে গণবিবাহ প্রকল্প বাস্তবায়িত করার আয়োজন করেছিল মধ্যপ্রদেশ সরকার (MP Government)। সেইমতো ২১৯ জন পাত্রীর নাম আগে থেকেই নথিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, বিয়ের আগে কনেদের প্রত্যেককে অন্তঃসত্ত্বা কিনা তাঁর প্রমাণ দিতে প্রেগ.নেন্সি টে.স্ট করানো হয়। গণবিবাহে এমন পরীক্ষা করানোর নিয়ম তো নেই। তাহলে মধ্যপ্রদেশের সরকারি অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটে কী করে? প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এখানেই শেষ নয়, প্রেগনেন্সির রিপোর্ট যাঁদের পজিটিভ এসেছে তাদের বিয়ে বাতিল পর্যন্ত করা হয়। এরপরই মধ্যপ্রদেশের চৌহান সরকারকে এক হাত নিয়েছেন বিরোধীরা। মূলত দুটো প্রশ্ন উঠছে। এক, কেন গণবিবাহের আসরে বেআইনি ভাবে মহিলাদের প্রেগনেন্সি টেস্ট করানো হল? আর দ্বিতীয় প্রশ্ন হল কে বা করা এই পরীক্ষার নির্দেশ দিলেন? এই নিয়ে মুখে কুলুপ প্রশাসনের।
যাঁদের বিয়ে বাতিল করা হয়েছে সেই সব কনেরা বলছেন তবুও স্বামীর সঙ্গে সহবাসেই তাঁরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। সরকার কোন আইনে এভাবে তাঁদেরকে অপমান করল এই নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। ডিন্ডোরী জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলছেন সরকারি নির্দেশ মেনেই নাকি এই কাজ করা হয়েছে। যে বিজেপি সরকার উন্নত মানসিকতা আর নারী শিক্ষা নিয়ে বড়াই করে, সেই বিজেপি শাসিত রাজ্যে যেভাবে নারীকে অসম্মান করা হচ্ছে তাতে মধ্যপ্রদেশেও উত্তরপ্রদেশের ছায়া দেখছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।