“হাতে আংটি নেই, ঘামাচি আছে”! কুন্তলের নিশানায় কে?

0
2

বুধবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) আংটি (Ring) পর্বের পর ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি। জেলের নিয়ম ভেঙে পার্থ কী করে তাঁর হাতে আংটি পরে আছেন, তা নিয়ে শুনানি চলাকালীনই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন বিচারক। পরে বুধবার বিকেলেই পার্থ সেই আংটি খুলেও রাখেন বলে জানা যায়। আর তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে বৃহস্পতিবার সকালেই আংটি নিয়ে মন্তব্য করলেন কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)।

বুধবারই নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল শুনানি (Virtual Hearing) ছিল। সেই শুনানিতেই উঠে আসে পার্থর হাতের আংটি প্রসঙ্গ। ভার্চুয়াল শুনানিতে বিচারক প্রশ্ন তুলেছিলেন, কীভাবে একজন জেলবন্দির হাতে আংটি থাকতে পারে? এই প্রসঙ্গে জেল সুপারকে তলবও করেছেন বিচারক। বুধবারই শুনানি চলাকালীন নিজের হাত তুলে ক্যামেরার সামনে বিচারককে তিনি নিজের আঙুলের আংটি দেখান এবং জানান, নিজের শারীরিক অবস্থার জন্যই আংটি পরেছেন তিনি। তবে কীভাবে সংশোধনাগারে থাকার পরও একজন কীভাবে অলঙ্কার পরতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির আইনজীবী। এইনি বিচারককে সাফ জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘প্রভাবশালী’ বলেই কী এমন সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন তিনি? এদিকে বৃহস্পতিবারই জেল হেফাজত শেষে কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষ (Niladri Ghosh), শান্তিপ্রসাদ সিনহা (Shanti Prasad Sinha), তাপস মণ্ডলকে (Tapas Mondal) আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়। এদিন আদালতের সামনে বেশ হাসিমুখেই প্রিজন ভ্যান থেকে নামতে দেখা যায় কুন্তলকে। এরপরই আচমকা দু’হাতের আঙুল তুলে দেখান সাংবাদিকদের। কটাক্ষের সুরে বলেন, “আমার হাতে আংটি নেই। ঘামাচি আছে।” তবে কেন তিনি এমন কথা বলেছেন, তাঁর কোনও ব্যাখ্যা দেননি কুন্তল। পাশাপাশি এদিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে কুন্তল দাবি করেন, “বিজেপি মুখপাত্র এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সির মুখপাত্র একই। এবার বুঝে নিন তদন্ত কোনদিকে এগোচ্ছে।”

তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আংটি পর্বের পরেই কুন্তলের এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিশানা করতেই কী এমন মন্তব্য করলেন কুন্তল এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে কুন্তলের মন্তব্যের লক্ষ্য যে পার্থই তা পরিষ্কার। তবে এদিন কারও নাম মুখে আনেননি কুন্তল। কিন্তু পার্থ এবং কুন্তলের দ্বৈরথ এই প্রথমবার নয়। এর আগেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে কুন্তলকে। এমনকী প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের ভিতরে পার্থ এবং কুন্তলের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সাক্ষী রয়েছেন রাজ্যবাসী। বুধবার অবশ্য বিচারকের প্রশ্নের পর পার্থ আংটি খুলে ফেলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্যের কারণে ওই আংটি তিনি বহুদিন ধরে ধারন করে আসছেন। ইডি বলেছিল, তাঁকে গ্রেফতারের সময়ে আংটি ছাড়িয়ে তারপর নাকতলার বাড়ি থেকে বের করা হয়েছিল। তারপর প্রভাব খাটিয়ে জেলে সেই আংটি আনিয়ে পরেছিলেন পার্থ।

অন্যদিকে, কুন্তলের এদিনের মন্তব্যের বিশ্লেষণ করে অনেকে বলছেন, এদিনের কথার মধ্যে দিয়ে আসলে কুন্তল বলতে চেয়েছেন তিনি ‘প্রভাবশালী’ নন। পার্থের মতো তাঁর হাতে আংটি রাখতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু এই প্রবল গরমে তাঁর হাতে ঘামাচি বেরিয়েছে। এদিন প্রেসিডেন্সি জেলে তখন পুলিশের গাড়ি থেকে সবে নামছিলেন। কুন্তলকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ নিয়ে কী বলবেন?’’ পাশাপাশি জানতে চাওয়া হয়, নিয়োগ মামলায় সম্প্রতি গ্রেফতার জীবনকৃষ্ণ সাহার সঙ্গে কি তাঁর কোনও সম্পর্ক আছে? জবাবে কিছুটা হাসিমুখেই দু’হাত দেখিয়ে কুন্তল বলেন, ‘‘আমার হাতে আংটি নেই। তবে ঘামাচি আছে।’’ তবে এদিন এক বার নয়, গাড়ি থেকে নেমে আদালতে ঢোকার আগে আরও এক বার একই কথা বলতে শোনা যায় কুন্তলকে।