দীর্ঘ ৪ বছর পর পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় সরকারের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের তৎকালীন রাজ্যপাল সতপাল মালিক। এমনকি এই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী মালিককে চুপ থাকতে বলেন। এই ইস্যুতেই এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে সরব হলেন ভারতীয় সেনার প্রাক্তন প্রধান শঙ্কর রায়চৌধুরী(Shankar Roychowdhury)। তিনি জানালেন এই ঘটনার প্রাথমিক দায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) নেওয়া উচিত। পাশাপাশি এই হামলার ঘটনায় গুপ্তচর সংস্থার চূড়ান্ত গাফিলতি রয়েছে। ফলে এনএসএ অজিত ডোভালেরও(Ajit Doval) উচিত নিজের ভাগের দায় নেওয়া।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে দেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান বলেন, ৭৮ টি গাড়িতে ২৫০০ জনের বেশি সেনা জওয়ানকে এভাবে রাজপথ দিয়ে নিয়ে যাওয়া কখনই উচিত হয়নি। তাও আবার সেই রাস্তা ধরে যা পাক সীমান্তের অত্যন্ত কাছে অবস্থিত। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন রাজ্যপাল মালিক জানিয়েছিলেন, সেনাবাহিনীর তরফে জওয়ানদের বিমানে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সে আবেদনে সাড়া দেয়নি। যদি তা মেনে নেওয়া হত তবে এই ঘটনা ঘটতই না। মালিকের মন্তব্যে সহমত পোষণ করে প্রাক্তন সেনাপ্রধান বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তা দিয়ে চলাকালীন মুজাহিদিন একেবারে পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। যদি গাড়ির পরিবর্তে সিআরপিএফ জওয়ানদের বিমানে নিয়ে যাওয়া হত তবে এই বিপুল প্রানহানি এড়ানো যেত।
শঙ্কর রায়চৌধুরীর কথায়, “উপত্যকার জাতীয় সড়কে বড় গাড়ি ও কনভয়ে সর্বদাই হামলার একটা আশঙ্কা থাকে। পুলওয়ামার যেখানে এই হামলার ঘটনা ঘটে সেটা সর্বদাই বিপদজনক জায়গা হিসেবে পরিচিত। জম্মুর সাম্বা (সাতওয়ারি বিমানবন্দর থেকে ৩১ কিমি) বরাবর যাওয়া রাস্তাটির অনেকটাই টানেলের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, এবং ওই অঞ্চলে অনুপ্রবেশের কারণে সবসময়ই বিপদ থাকে। আর এই ধরনের জাতীয় সড়কে আপনি যত বেশি যানবাহন নেবেন, তত বেশি আপনি তাদের ঝুঁকিতে ফেলবেন, কারণ পাকিস্তান সীমান্ত থেকে এটা খুব বেশি দূরে নয়।” এরপরই সরকারকে তোপ দেগে রায়চৌধুরী বলেন, “এটি একটি বিরাট বড় গাফিলতি যা সরকার আড়াল করার চেষ্টা করছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সৈন্যদের এয়ারলিফ্ট করা উচিত ছিল, যা বেসামরিক বিমান পরিবহণ, বায়ুসেনা বা বিএসএফের কাছেও পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, ‘ব্যর্থতার দাবিদার নেই।’