বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা, ইডি-সিবিআইয়ের হেনস্থা! প্রতিবাদে রাজধানী অচল করার ডাক অভিষেকের

0
1

সড়ক যোজনা থেকে শুরু করে আবাস যোজনার টাকা কে আটকে রেখেছে? প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে তুলোধনা করলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এদিনের সভা মঞ্চ থেকে বাংলার বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে রাজধানী অচল করার ডাক দেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “ED-CBI-এর পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আর একুশে হেরে যাওয়ার পর বাংলার প্রতি বঞ্চনার প্রতিবাদে আমাদের এই সভা।“ অভিষেকের কথায়, “আজ একটা ট্রেলার দেখলাম। আগামী দিনে দরকার হলে আমরা দিল্লির (Delhi) বুকে এই আন্দোলন নিয়ে যাব।“

অভিষেকের অভিযোগ, “২০২১-এর নির্বাচনে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়ার পরে আবাস যোজনা গ্রামীণ রাস্তা ১০০ দিনের টাকা বন্ধ। মানুষের কাজের টাকা বন্ধ। ২০১৪ সাল ৫ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড থেকে সভা করে বলেছিলেন আমি প্রধানমন্ত্রী হলে বাংলার মানুষের হাতে দুটো লাড্ডু তুলে দেব। সত্যি তাই। ১০০ দিনেও লাড্ডু, আবাস যোজনার জন্যও লাড্ডু।“

কেন্দ্রীয় প্রকল্প মোদির নামে করারও প্রবল বিরোধিতা করেন অভিষেক। প্রশ্ন তোলেন, “বাংলার মানুষের বাড়ি হলে, রাস্তা হলে প্রধানমন্ত্রীর নামে হওয়া উচিত নাকি বাংলার নামে হওয়া উচিত? কার নামে? বাংলার প্রকল্প কার নামে হওয়া উচিত? ক্রিকেট স্টেডিয়াম নিজের নামে, রাস্তা বাড়ি নিজের নামে। ভারতের অন্য প্রান্তে হলেও বাংলায় হবে না। বাংলার মানুষ মাথা নত করতে জানে না।“ এই প্রসঙ্গে শহিদ মিনারের নামের ইতিহাস ব্যাখ্যা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

বিভিন্ন ইস্যুতে এদিন মোদি সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন অভিষেক। তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, “বিলকিস বানু ধর্ষণকারী বলে বাইরে। সভা মঞ্চ আলো করে বসে। এই বিজেপির কাছে আমাদের শিক্ষার সংহতির বাণী শুনতে হবে? আর ভাইপো খালি। ৩ বছর হয়ে গেল আজও নাম নিতে পারেনি আমার”। কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে তুলোধনা করেন অভিষেক। অভিযোগ করেন, ”সারদাকাণ্ড থেকেই আমার পিছনে লেগেছে এজেন্সি। মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ যখন বন্দি, তখন তাঁদের বলেছিল, “অভিষেকে নাম বললে, ছেড়ে দেব””। মঞ্চে বসে সে কথায় সমর্থন জানান মদন মিত্র। এরপেরই ফুঁসে উঠে অভিষেক বলেন, “আমার জন্য আলাদা আইন করার দরকার নেই। যদি প্রমাণ করতে পারে আমি যুক্ত তাহলে যাই হোক, যে ইস্যুতেই হোক আলেই শহিদ মিনারের মঞ্চে ফাঁসি বরণ করব।”

২২ মাসে ২১টা মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার কারণ যে করে হোক তৃণমূলকে দুর্বল করতে চায় কেন্দ্রের শাসকদল। ”যাঁদের নামে মিথ্যে মামলা হবে সরাসরি এক ডাকে অভিষেক ফোন করে জানাবেন। আমি পাশে গিয়ে দাঁড়াব। কর্মীদের কারও গায় আঁচড় পড়লে ছাড়ব না।” এরপরেই দুর্নীতির অভিযোগে দলের নেতাদের বন্দি থাকার ঘটনার বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ বলেন, “আমার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। কেউ যদি কোনও কিছুতে জড়িত থাকে। সন্দেহের বশে হলেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রীর ছেলে কৃষকদের পিষে দিয়েছে। তার বাবা এখনও পদে আছে। দলের ব্যাজটা এবার থেকে পরে বেরোবেন। বলবেন এই দলই ব্যবস্থা নেয়। এই দলের পাশেই থাকব“।

বাংলার থেকে ভোট পেয়েও বিজেপি (BJP) বাংলার উন্নয়নে কোনও কাজ করছে না। এই অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, “২০১৯-এ ১৮টা সাংসদ দিয়েছে বাংলা আর কেন্দ্র ১০৬টা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বন্ধ করেছে। ২০২১-এ ৭০টি বিধায়ক দিয়েছে বাংলা ১৫১ টিম পাঠিয়েছে কেন্দ্র।“ সভা থেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অভিষেক বলেন, “২১ মাসে ২১টা সিবিআই হয়েছে। ক্ষমতা থাকলে ১০০ টা সিবিআই করুন। কিন্তু ১০০ দিনের ১৭ লক্ষ মানুষের টাকা ছাড়ুন। আমরা ব্যবস্থা নেব কেউ জড়িত থাকলে। না হলে আমি কিন্তু দিল্লি অচল করে দেখাব। বাংলার পাওনা দিল্লির বুক থেকে ছিনিয়ে আনব।“