মেঘরাজ্যে ফুটল ঘাসফুল: ‘হাত’-এর কারসাজি অতীত, ২-এ থামল ‘পদ্ম’

0
1

বুথ ফেরত সমীক্ষায় আভাস দেওয়া হয়েছিল মেঘালয়ে(Meghalaya) সবচেয়ে বেশি আসন যাবে এনপিপির(NPP) দখলে। বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশের পর তা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেলেও। মেঘরাজ্যে লক্ষণীয় উত্থান দেখা গেল তৃণমূলের। অন্যদিকে এই পাহাড়ি রাজ্যে বেহাল অবস্থা বিজেপির(BJP)। গতবার এনপিপির সঙ্গে জোট বেধে বিজেপি সরকার গড়লেও এবার মাত্র ২ আসনে থামতে হল বিজেপিকে। ভোটের হার মাত্র ৯ শতাংশ। সে তুলনায় মেঘালয়ে ৫ আসনে জয় পেল ঘাসফুল(TMC) শিবির। ভোটের হার প্রায় ১৪ শতাংশ। তৃণমূলের এই সাফল্যের জন্য মেঘালয়বাসীকে এদিন ধন্যবাদ জানান, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhisekh Banerjee)।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে মেঘালয়ে শেষ পাওয়া খবরে, ৬০ আসনের মেঘালয়ে এবার ভোট হয়েছিল ৫৯ আসনে। সেখানে এনপিপি জয়লাভ করেছে ২৪ টি আসনে। দুটি আসনে এগিয়ে রয়েছে তাঁরা। বিজেপি এবার এনপিপি জোট ভেঙে একা লড়াইয়ে নামলেও তাদের প্রাপ্ত আসন মাত্র ২, ভোটের হার ৯ শতাংশ। পাশাপাশি ৫ আসন পেয়ে কংগ্রেসের ভোট শতাংশ ১৩। তবে অল্পদিনের সংগঠনে মেঘ রাজ্যে বড় চমক দিয়েছে তৃণমূল। প্রথমবার এখানে লড়াইয়ে নেমে ৫ আসনে জয় পেয়েছে ঘাসফুল শিবির। তবে ১৯৮৩ সাল থেকে বিধানসভা নির্বাচনের ধারায় নজর রাখলে দেখা যাবে প্রতিবছরই ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হয়ে এসেছে মেঘালয়ে। কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। তবে প্রথমবার লড়ায়ে নেমে মেঘরাজ্যে ঘাসফুল ফোটায় উচ্ছসিত তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মেঘালয় প্রসঙ্গে মমতা জানান, “অল্পকিছুদিন আগে আমরা মেঘালয়ে সংগঠন শুরু করেছিলাম। আজ নির্বাচনে আমরা ১৫ শতাংশ ভোট পেয়েছি। এই সাফল্য আমাদের জাতীয় দলের মর্যাদা রেখেছে। এবং প্রধান বিরোধী দল হিসেবে মেঘালয়ে আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে। তৃণমূলকে আশীর্বাদ করার জন্য মেঘালয়ের মানুষকে আমার ধন্যবাদ। আগামী দিনে আমরা আরও ভাল করব।” এর পাশাপাশি এই নির্বাচনে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে সে কথা তুলে ধরে মমতা বলেন, “মেঘালয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, আমরা তৃণমূল কংগ্রেস ওরা কংগ্রেস। ফলে কিছু ক্ষেত্রে ওখানকার মানুষ কংগ্রেসকে ভেবে নিয়েছে ওটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।”

পাশাপাশি মেঘালয়বাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি বিনীতভাবে মেঘালয়ের ভোটারদের ধন্যবাদ জানাই আমাদের এত ভালবাসা দেওয়ার জন্য এবং আমাদের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। তৃণমূল নির্বাচিত ৫ জন বিধায়ককে অভিনন্দন। আমি রাজ্য জুড়ে প্রতিটি দলীয় কর্মীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই গত এক বছরে তাদের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার জন্য।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “আমি এই সুন্দর পাহাড়ি রাজ্যের জনগণকে জানাতে চাই আমরা দায়িত্বশীল বিরোধী হিসাবে কাজ করে যাব এবং জনগণের সেবার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করব।”

তবে মেঘালয় নির্বাচনে আর একটি বিষয় অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য তা হল কংগ্রেসের বেহাল দশা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যদি চোখ রাখা যায় হবে দেখা যাবে গতবার এখানে কংগ্রেস পেয়েছিল ২১টি আসন। এনপিপি ২০। বিজেপি ২টি। তৃণমূল সেবার নির্বাচনে না থাকলেও এবার তৃণমূল ভোটের মানচিত্রে ঢোকার পর কংগ্রেসের আসন সংখ্যা ২১ থেকে কমে নেমে এসেছে ৫-এ। নিশ্চিতভাবে এই অবনতি চোখে পড়ার মতো।