একেই বলে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ! সাগরদিঘি উপনির্বাচনে রাজ্যের প্ৰধান বিরোধী দল হয়েও কার্যত জামানত “বাজেয়াপ্ত” বিজেপি (BJP) একেবারে তলানিতে! সৌজন্যে দলবদলু শুভেন্দু অধিকারী (Shubhendu Adhikari)। নিজের ব্যক্তিগত ইগো থেকে হাইভোল্টেজ এই উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নয়, বরং তাঁর ঘনিষ্ঠ বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকে জেতাতে তিনি যে মাঠে নেমে ছিলেন, তার জন্য রাজনৈতিক বোদ্ধা হওয়ার প্রয়োজন নেই। এবং জোট প্রার্থী যে আসলে তাঁরই সমর্থিত, সেটা গোটা মুর্শিদাবাদ জেলার আট থেকে আশি, সকলের কাছেই চর্চিত। তা না হলে গণনার আগেরদিন পর্যন্ত একগাল হাসি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে শুভেন্দু (Shubhendu Adhikari) বলছেন, “কে জিতবে জানি না, তবে তৃণমূল হারবে…!” অর্থাৎ দলীয় প্রার্থীর হয়ে সাগরদিঘিতে গিয়ে প্রচারের নামে নাটক করলেও, রামের ভোট সুকৌশলে বামে যে ট্রান্সফার করেছেন সেটা দিনের আলোর মতো পরিস্কার।
দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) থেকে সুকান্ত মজুমদাররাও বুঝেছেন শুভেন্দুর কারসাজি। খুব স্বাভাবিকভাবেই খবর পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি নেতৃত্বের কাছে। শোনা যাচ্ছে, সাগরদিঘিতে অশুভ আঁতাত করে দলীয় প্রার্থীকে বলি দেওয়ার জন্য দিল্লির ধমকও খেয়েছেন শুভেন্দু।
হাত প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়লেন নিন্দুকরা বলছেন, বায়রন আসলে শুভেন্দু সমর্থিত বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী। নির্বাচনের আগে থেকেই মুর্শিদাবাদ জেলায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল, বায়রন বিশ্বাস আদপে দলবদলু বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ। শুভেন্দু-বায়রনকে এক ফ্রেমেও দেখা গিয়েছে। এমনকি, শুভেন্দুর কথাতেই সাগরদিঘিতে বায়রন বিশ্বাসকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস, যা মেনে নিয়েছে বামেরাও।
গত ২৭ জানুয়ারি ভোটের দিনও একটি বুথের বাইরে কংগ্রেসের বায়রন বিশ্বাস ও বিজেপির দিলীপ ঘোষকে হাতে হাত রেখে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। এবং বিজেপি প্রার্থীর ভোটের হার দেখলেই পরিস্কার, রাম ভোট গিয়েছে কংগ্রেস-বামে। ফলে বাম-রাম-শ্যামের জোট নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ-ই প্রমাণিত হল সাগরদিঘির মাটিতে।
এদিন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “এই নির্বাচনে কংগ্রেস-বাম আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়েছিলাম। আমার মনে হয়, কৌশলগত কারণে অনেক বিজেপিও ভোট দিয়েছে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস জিতেছে।” অর্থাৎ, অধীর পরোক্ষে স্বীকার করে নিলেন বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীকে আড়াল থেকে সমর্থন করেছে বিজেপিও।