‘কংগ্রেসের ভিমরতি হয়েছে”, তোপ অভিষেকের! রাহুলকে “অপদার্থ” কটাক্ষ কুণালের

0
3

আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ৬০ আসন বিশিষ্ট মেঘালয়ে হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রচারে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। এবার মেঘালয়ে অন্য সমীকরণে ভোট হতে চলেছে। চতুর্মুখি লড়াইয়ে অন্যদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে তৃণমূল। নির্বাচনী জনসভায় জমায়েত হোক কিংবা রোড-শো সবেতেই বাকিদের পিছনে ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল, যেখানে শাসক এনপিপি থেকে শুরু করে বিজেপি বা কংগ্রেস পিছিয়ে। সবমিলিয়ে মেঘালয়ে পরিবর্তনের হাওয়া স্পষ্ট। বলে রাখা দরকার, মেঘালয় দেশের একমাত্র রাজ্য যেখানে একটা সময় সরাসরি কংগ্রেস সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল বিজেপির দিকে। ফলে মেঘালয়ে পরীক্ষিত সব দলগুলির গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হয়েছে মানুষের কাছে। এবার মেঘালয়বাসী বিকল্প হিসেবে তৃণমূলের উপর ভরসা রাখতে চাইবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

সেই আবহে দাঁড়িয়ে আজ, বুধবার মেঘালয়ের গাড়োতে ঐতিহাসিক জনসভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মেঘালয়ে তৃণমূলের মুখ মুকুল সাংমা সহ দলীয় প্রার্থী ও স্থানীয় নেতৃত্ব। অন্যদিকে, পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে বুঝে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অন্য দলগুলোকে ছেড়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী সরাসরি তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ও তৃণমূলকে আক্রমণ করে রাহুল গান্ধী বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস পরোক্ষেভাবে নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপিকে সমর্থন করে তাদের সুবিধা করে দিচ্ছে।”

রাহুলের এমন মন্তব্যের পর চুপ থাকেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সরাসরি রাহুল গান্ধীকে কড়া ভাষায় জবাব দিতে গিয়ে বলেন, ”প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ভিমরতি হয়েছে কংগ্রেসের”।

রাহুলকে নিশানা করে টুইট, “দেশজুড়ে কংগ্রেস বিজেপিকে রুখতে ব্যর্থ। ওরা অপ্রসাঙ্গিক, অযোগ্য এবং নিরাপত্তাহীন একটা দল। প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ভিমরতি হয়েছে কংগ্রেসের। আমি রাহুল গান্ধীকে বলব নিজেদের অহংয়ের রাজনীতি থেকে সরে এসে আত্মসমালোচনা করুন। আর হ্যাঁ, আমাদের উন্নতি টাকার জোরে হচ্ছে না। হচ্ছে মানুষের ভালবাসায়।”

এখানেই শেষ নয়। বাংলার নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে সুর চড়িয়ে অভিষেক রাহুকের কাছে প্রশ্ন তোলেন, “আপনার যুক্তি অনুযায়ী, কংগ্রেসও তো ২০২১ সালে এ রাজ্যে (পশ্চিমবঙ্গে) ৯২টি আসনে লড়েছিল। এটা কি তাহলে বিজেপিকে সমর্থন করার পরিকল্পনা ছিল?” সবশেষে অভিষেকের কটাক্ষ, “তৃণমূলকে নিয়ে এমন একটা দল কথা বলছে, যারা শেষ ৪৫টি বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে ৪০টিতে হেরেছে।”

তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনই মেঘালয়ের জনসভা থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, “মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে কংগ্রেস। ওরা লড়াইটাই করতে পারে না।”

এরপরই রাহুল গান্ধী মেঘালয়ের সভা থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করে বকেন, “আপনারা তৃণমূলের ইতিহাসও জানেন। বাংলায় হওয়া সহিংসতার ঘটনার কথাও আপনারা জানেন। আপনি তাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে আপনারা অবগত। তারা গোয়ায় এসেছিল এবং বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করেছিল। কারণ তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিজেপিকে সাহায্য করা। আর মেঘালয়ে তৃণমূলের ভাবনা বিজেপি যাতে ক্ষমতায় আসে তা নিশ্চিত করা।”

এমন মন্তব্যের পর রাহুলকে কটাক্ষ করতে দেরি করেননি তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকে “অপদার্থ” বলে তোপ দাগেন কুণাল। কংগ্রেসের পারটাইমার নেতা রাহুলের অযোগ্য নেতৃত্বেই দেশজুড়ে প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে কংগ্রেস। কুণালবাবু বলেন, সোনিয়া গান্ধীর প্রতি তাঁদের পূর্ণ সম্মান আছে। কিন্তু সোনিয়াকে অপদার্থ ছেলের ব্যর্থতার জন্য ভুগতে হচ্ছে। নিজের আঁচল দিয়ে ছেলের অপদর্থতা আড়াল করতে হচ্ছে সোনিয়াকে।

আরও পড়ুন- পরীক্ষকরাই জানেন না ইংরাজি! হতবাক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়