গত দেড় বছরে পশ্চিমবঙ্গে যে কয়টি বিধানসভা উপনির্বাচন হয়েছে সবকটিতেই বিপুল মার্জনে জিতেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সৌজন্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অবাক হচ্ছেন তো, কিন্তু এটাই সত্যি! দলবদলুর এই বিজেপি নেতা যেখানে যেখানে প্রচারে গিয়েছেন, সেখানে সেখানে শুধু তৃণমূল প্রার্থীরা জেতেনি, রেকর্ড মার্জিনে জয় পেয়েছে ঘাসফুল শিবির।
একটি ছোট্ট পরিসংখ্যান তুলে ধরলেই চিত্রটা আরও স্পষ্ট হবে। যেখানে শুভেন্দু দায়িত্ব নিয়ে হারিয়ে নিজের দলের প্রার্থীদের। ২০২১ সালের ভবানীপুর বিধানসভা উপনির্বাচন থেকে শুরু করে সর্বশেষ বালিগঞ্জ বিধানসভা ও আসানসোলে লোকসভা উপনির্বাচনে রেকর্ড মার্জিনে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই উপনির্বাচনগুলিতে তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ের জন্য যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের জনমুখী প্রকল্পগুলির অবদান ছিল, একইভাবে দলবদলু শুভেন্দু অধিকারীকেও ইভিএমে জবাব দিয়েছেন মানুষ।
২০২১ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর উপনির্বাচনে রেকর্ড মার্জিনে জিতেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে লাগাতার তৃণমূল বিরোধী প্রচার করে গিয়েছেন শুভেন্দু। ঠিক একমাস পর দিনহাটা, শান্তিপুর, খড়দহ, গোসাবা উপনির্বাচনে অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়ে জয়ী হয়েছিলেন শাসক দলের প্রার্থীরা। বিজেপির দখলে থাকা দিনহাটা, শান্তিপুরও ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। আর এই দুই কেন্দ্রে গিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করে ভোট প্রচার করেছিলেন শুভেন্দু। নিট ফল জিরো।
গতবছর ১২ এপ্রিল বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন ও আসানসোলে লোকসভা উপনির্বাচনেও জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থীরা। বিশেষ করে আসানসোলে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা সর্বকালীন রেকর্ড মার্জিনে জিতে ছিলেন। প্রথমবারের জন্য তৃণমূলের দখলে আসে আসানসোল। এবং এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রধান সেনাপতির ভূমিকায় ছিলেন শুভেন্দু। যা হওয়ার তাই হয়েছে, গো-হারা হেরেছে বিজেপি।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি কেন্দ্রে ফের একটি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। যেখানে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সাহা কোটি কোটি টাকার মালিক। নির্বাচনী হলফনামায় শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এই ব্যবসায়ীর সম্পত্তির পরিমাণ ৬৭ কোটিরও বেশি। উপনির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ধনীতম বিজেপির দিলীপ সাহা। শুভেন্দুর ইচ্ছাতেই তাঁকে প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির। দিলীপ সাহার হয়ে লাগাতার প্রচার করছেন শুভেন্দু। ২ মার্চ সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা। ওইদিন ফের রেকর্ড মার্জিনে বিজেপি প্রার্থী যে হারতে চলেছেন তা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। এবং সেই হারের পিছনেও শুভেন্দুর ভূমিকা যে থাকবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আসলে বাংলার রাজনীতিতে দলবদলু শুভেন্দুর গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে ঠেকেছে।








































































































































