রঞ্জন গ্রেফতারে ‘হতাশ’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়! ফের সাক্ষী করার দাবি কুণালের

0
2

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বাগদার চন্দন মণ্ডল (Chandan Mandol) ওরফে ‘সৎ রঞ্জন’কে গ্রেফতার করেছে CBI। কিন্তু একথা শুনেও কার্যত হতাশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguli)। এজলাসে বসেই বললেন “বাগদার রঞ্জন গ্রেফতার হয়ে আর কী হবে? কিছুই হবে না। ৭–৮ মাস ধরে অনেক কিছুই চলছে। সৎ রঞ্জনকে ডাকাও হয়েছে। এখন গ্রেফতার করেছে। কিচ্ছু হবে না।“ এই বিষয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, বিচারপতিরাই তো একসময় হৈ হৈ করে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তদন্তের ভার দিয়েছিলেন। এখন তাঁরাই তারাই হতাশ হচ্ছেন, এর মানে কী! এরপরেই ফের অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে এই দুর্নীতির তদন্তে সাক্ষী করার কথা বলেন কুণাল।

এদিন প্রাথমিক শিক্ষার দুর্নীতির তদন্তে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল ওরফে রঞ্জনকে নিজাম প্যালেসে তলব করে সিবিআই। সেখানেই প্রশ্নের সঠিক জবাব না দেওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। চন্দনকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে, আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, “বাগদার রঞ্জন সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।“ তখনই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায় হতাশার সুর শোনা যায়। বলেন, “বাগদার রঞ্জন গ্রেফতার হয়ে আর কী হবে? কিছুই হবে না। ৭–৮ মাস ধরে অনেক কিছুই চলছে। সৎ রঞ্জনকে ডাকাও হয়েছে। এখন গ্রেফতার করেছে। কিচ্ছু হবে না।“

গত বছর জুলাই মাসেই বাগদায় চন্দনের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা চলাকালীনই প্রকাশ্যে এসেছিল যে প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া ‘রঞ্জন’ই যে আসলে চন্দন মণ্ডল। কিন্তু এই ঘটনাতেও হতাশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। CBI-এর দীর্ঘসূত্রিতা নিয়েই অসন্তুষ্ট তিনি। কিন্তু তিনিই তো সিআইডি-র থেকে এই তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছেন।

এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিচারপতিরাই হৈ হৈ করে সিবিআইকে দায়িত্ব দিচ্ছেন। আবার তারাই হতাশ হচ্ছেন। এর মানে কী!“ এরপরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম না করে কুণালের বক্তব্য, সিআইডি বা রাজ্য প্রশাসনের থেকে তদন্তভাব নিয়ে বিচাপতিরাই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দেন। তারপর তাঁরা সিবিআইয়ে দীর্ঘসূত্রিতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। অফিসারদের বদল করতে বলেন। সিবিআই অফিসারদের সম্পত্তির হিসেব নেওয়া কথা বলেন!

আরও পড়ুন- জামিনের আবেদন নেই, ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজত অনুব্রতর

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের মতে, “যাঁরা অপরাধ করেছেন তাঁদের গ্রেফতার করুক। এতে তৃণমূলের কিছু বলার নেই।“ এখানে তৃণমূল জড়াবে না বলেও জানান কুণাল। তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূল কাউকে গার্ড দিতে যাবে না। যাঁরা অপরাধ করেছেন তাঁদের গ্রেফতার করুক। এতে দলের কিছু বলার নেই।” এরপরেই এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে কুণাল বলেন, মহামান্য আদালত ভেবে দেখুন, একটা এডেন্সি থেকে নিয়ে অন্য এজেন্সিকে দেওয়া হচ্ছে। আবার সেই তদন্তকারী সংস্থার উপরেও আস্থা রাখা যাচ্ছে না। “এখন সিবিআইয়ের ক্রেডেবিলিটি ডাউন করা হচ্ছে।”

এরপরেই ফের অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দুর্মীতি মামলায় সাক্ষী করার কথা বলেন কুণাল। তাঁর মতে, তিনি এই বিষয়ে অনেক বেশি জানেন। তিনি এটার মধ্যে ছিলেন। সুতরাং, তাঁকে এই ঘটনায় সম্মানীয় সাক্ষী করা হোক। তিনি বিচারপতি হিসেবে বসে থাকায় সময় নষ্ট হচ্ছে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গোপন জবানবন্দি দিন। তিনি এত জানেন যখন, তিনি সঠিক তথ্য দিতে পারবেন!