ত্রিপুরা কইতাসে, মমতাদি আইতাসে! আবেগে ভাসছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা

0
2

সোমনাথ বিশ্বাস, আগরতলা

মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে মূল শহরের দিকে আসার পথের দু’পাশ রঙিন পতাকায় মোড়া। লাল-গেরুয়ার পাশাপাশি উজ্জ্বল তৃণমূলের তেরঙ্গা পতাকাও। ত্রিপুরায় হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে ঝড় তুলতে দু’দিনের সফরে আজ আগরতলায় আসছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গী দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রস্তুতি। আঁটোসাটো করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন:রাত পোহালেই ত্রিপুরায় প্রচারে মমতা-অভিষেক, পুজো দেবেন ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরেও

এদিকে শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্ট-ডাউন। দিদির আগমনী বার্তায় আবেগ-উচ্ছ্বাসে ভাসছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। “ত্রিপুরা কইতাসে, মমতাদি আইতাসে!”, এটাই যেন এখন আগরতলায় তৃণমূলের থিম সং। আট থেকে আশি, প্রত্যেকের মুখে ঘুরছে এই গান।

দু’দিনের এই সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার প্রথমদিন দুপুরে কলকাতা থেকে আগরতলায় এসে পৌঁছবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিমানবন্দর থেকে সোজা উদয়পুরের ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে চলে যাবেন তাঁরা। বিকেল ৫টা নাগাদ সেখানে পুজো দিয়ে তাঁরা ফের আগরতলায় ফিরবেন। রাতে আগরতলাতেই থাকবেন মমতা-অভিষেক। প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে নেত্রী বৈঠক করতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে। এরপর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে বর্ণাঢ্য রোড-শো করবেন মমতা-অভিষেক। গোটা শহরে হাঁটবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমপক্ষে ৮ কিলোমিটারের উপর হাঁটবেন তিনি। জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রভবন থেকে শুরু হবে পদযাত্রা। সেখান থেকে রাজবাড়ি, অ্যাকশন গেট, কামান চৌমুহনী, সূর্য চৌমুহনী, বটতলা, শঙ্কর চৌমুহনী, বিদুরকর্তা চৌমুহনী ঘুরে রবীন্দ্রভবনে এসেই শেষ হবে মিছিল। সেখানেই জনসভা করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর পদযাত্রাকে ঘিরে আগরতলায় উৎসাহ তুঙ্গে।

মমতা-অভিষেক ত্রিপুরায় পা রাখার ঠিক ২৪ ঘন্টা আগে গতকাল, রবিবার বিধানসভা নির্বাচনর জন্য তৃণমূলের তরফে ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছে ৷ ত্রিপুরায় ব্যর্থ হয়েছে বিজেপির ডবল ইঞ্জিন। পাঁচবছর ক্ষমতায় থেকে রাজ্যকে কার্যত জঙ্গলরাজ তৈরি করেছে গেরুয়া শিবির। তৈরি হয়েছে সন্ত্রাসের বাতাবরণ। গণতন্ত্র ভু-লুণ্ঠিত। রাজ্যে শিল্প নেই, নেই কর্মসংস্থান। স্বাস্থ্যের বেহাল দশা। ভেঙে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। তৃণমূলের ইস্তেহার ১০,৩২৩ ছাঁটাই শিক্ষকদের বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও ইস্তেহারে ত্রিপুরার সামগ্রিক উন্নয়নে ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বভারতীয় সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল। গত দু’বছর ধরে ত্রিপুরায় সংগঠন তৈরিতে ব্যাপক পরিশ্রম করেছে ঘাসফুল শিবিরের নেতা-নেত্রীরা। অন্য দলগুলি থেকে তৃণমূলে যোগদানের হিড়িক লেগেছে। এর আগেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগরতলায় এসে সদর্পে ঘোষণা করেছিলেন, ত্রিপুরায় এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া হবে না বিজেপিকে। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে জবাব দেওয়া হবে। এবার তৃণমূল প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে আসছেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর আগমনে বিধানসভা ভোটের আগে ত্রিপুরার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা যে ব্যাপক চাঙ্গা হয়ে উঠবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরার মাটিতে পা দেওয়ার আগে দলের রাজ্য সভাপতি পীযূষ বিশ্বাস বলেন, “একটি মিশনে রাজ্যে আসছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তা হল এরাজ্য থেকে বিজেপিকে তাড়ানো।”