ইচ্ছাপূরণ! মৃ*ত স্বামীর দেহ বাড়িতে আগলে রেখে ছেলেকে বিয়ে করাতে রাজি করালেন প্রৌঢ়া

0
2

ছেলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছে। তাই ধুমধাম করে ছেলের বিয়ে দেবেন, এটাই চেয়েছিলেন ছেলের বাবা। বহরমপুরের ঘাটবন্দর এলাকার রাধাকৃষ্ণ খান লেনের বাসিন্দা তাপস সাহা ( ৬২) সেভাবেই বিয়ের তোড়জোর করছিলেন।কিন্তু গত মঙ্গলবার ছেলের বিয়ের আগে সব পড়ে রইল।ইচ্ছাপূরণ হয়নি তাপসবাবুর। গত মঙ্গলবারই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। যদিও তাঁর দেহ ঘরে রেখেই বিয়ে করেন তাঁর ছেলে।

আরও পড়ুন:সম*কামী আইনজীবীকে নিয়োগের সুপ্রিম সুপারিশ, মোদি সরকারের আর্জি খারিজ কলেজিয়ামের

পরিবারের তরফে জানা গেছে, ওইদিন ভোরে ছেলের বিয়ের কিছু আচার-অনুষ্ঠান নিজেই করেন তাপসবাবু। পরে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শোকের আবহে বিয়ে প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কিন্তু জেদ ধরেন তাপসবাবুর স্ত্রী।ছেলেকে বোঝান তিনি নিজেই। শেষ পর্যন্ত বাবার দেহ বাড়িতে রেখেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে রাজি হন তাপসবুর ছেলে তন্ময়।

বৃহস্পতিবার তাপসবাবুর স্ত্রী করবী সাহা জানান, ‘‘অনেক দিন ধরে বিয়ের প্রস্তুতি চলেছে। তখন থেকেই আমার স্বামী বলতেন, ছেলের বিয়ে জাঁকজমক করে করতে হবে। যেন সকলের মনে থাকে। ১৭ জানুয়ারি বিয়ের দিন স্থির হয়। ১৯ জানুয়ারি বৌভাত। অনুষ্ঠান বাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। আইবুড়ো ভাতের দিনও বাড়ির লোকজনের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করেছেন উনি। মঙ্গলবার ভোরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই সব শেষ।’’
এদিকে শোকের আবহে বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে বারণ করেন আত্মীয় স্বজনরা।বেশিরভাগই বিয়ে বন্ধ রাখার পরামর্শ দেন। কিন্তু সদ্যপ্রয়াত স্বামী নিজে হাতে ছেলের বিয়ের সব তোড়জোড় করেছিলেন। তাঁর কথা ভেবেই ছেলেকে বিয়ে করার জন্যে বোঝান কবরী। শেষ পর্যন্ত কোনও আড়ম্বর ছাড়াই সিঁদুর দান হয়।


তাপসবাবুর ছেলে তন্ময় সাহা জানান, “বিয়ের সব আয়োজন বাবাই করেছিলেন। কিন্তু কিছুই তিনি দেখে যাতে পারলেন না। এই দুঃখ সারা জীবন বইতে হবে।’’ বৃহস্পতিবার ছিল তন্ময়ের বৌভাত অনুষ্ঠান। তাঁর আগেই প্যান্ডাল খুলে ফেলা হয়েছে। কয়েকজন আত্মীয়ের ভিড় থাকলেও বাড়িতে এখন শোকের আবহ বিরাজমান ।