ভারত ৩৪৯/৮ (৫০ ওভার)
নিউজিল্যান্ড ৩৩৭ (৪৯.২ ওভার)
উত্তেজনায় কাঁপছে নিজামের শহর। সাড়ে তিনশো তুলে অবাক হারের সামনে ভারত। কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না ব্রেসওয়েল আর স্যান্টনারকে। এই যখন অবস্থা, তখন দলের সামনে ত্রাতা হয়ে দাঁড়ালেন মহম্মদ সিরাজ। ঘরের ছেলে। এই মাঠ তাঁর চিরকালের চেনা। দশম ওভারে বল করতে এসে মোক্ষম দুই বলে দুই উইকেট। তারপরও টেনশন। কিন্তু শেষ ওভারে সেই শার্দূল, যিনি আগে বিস্তর পিটুনি খেয়েছেন, ব্রেসওয়েলকে (১৪০) তুলে নিয়ে ম্যাচ শেষ করে দিলেন। ভারত জিতল ১২ রানে।

ওভার পিছু ৭ রান। এরকম একটা লক্ষ্য লাথামদের সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন শুভমন গিল। শুভমনই, কারণ তাঁর ওই বিধ্বংসী দুশোর পর খেলার মানচিত্র এরকম দাঁড়িয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ভাল হয়নি। কিন্তু তারপরও ম্যাচ যত এগোল, পেন্ডুলামের মতো দোল খেল! সেটা ব্রেসওয়েলের চোখ-ধাঁধানো সেঞ্চুরির জন্য। স্যান্টনারের সঙ্গে ১৬২ রানের সপ্তম উইকেট পার্টনারশিপের জন্যও।

২৮ রানে কনওয়েকে (১০) তুলে নেন সিরাজ। কিন্তু কনওয়ে ফিরে যাওয়ার পর ফিন অ্যালেন (৪০) আর হেনরি নিকলস (১৮) প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। কিন্তু অ্যালেন ফিরে যাওয়ার পর রানটা দাঁড়াল ১৩১/৬। এখান থেকে স্যান্টনার (৬৬) আর ব্রেসওয়েল (৫৫) মিলে ম্যাচের গতি প্রায় বদলে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সিরাজ! নিজের শেষ ওভারে পরপর স্যান্টনার (৫৭) আর শিপলিকে (০) তুলে নিয়ে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে এলেন। সিরাজ নিলেন ৪৬ রানে ৪ উইকেট। ভারত হায়দারাবাদে জিতে সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০-তে।
উপলের এই মাঠে নামার আগে একদিনের ক্রিকেট হাজার রান করতে ১০৬ রান দরকার ছিল শুভমন গিলের। তিনি রানটা ডাবল সেঞ্চুরিতেই করে দিলেন। ১৯ ইনিংসে এই রান। শুভমন এটা করে পিছনে ফেলে দিলেন মহাতারকা বিরাট কোহলিকে। শিখর ধাওয়ানকেও। দু’জনেই ২৪ ইনিংসে হাজার রান করেছিলেন। পাঞ্জাব ওপেনার পাঁচ ইনিংস কম খেলে এই ল্যান্ডমার্কে পৌঁছে গেলেন।
আরও আছে। এই হায়দারাবাদের লালবাহাদুর শাস্ত্রী স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এযাবৎ এক ভারতীয়ের সর্বোচ্চ রান ছিল শচীন তেন্ডুলকরের। ১৯৯৯-এ তিনি করেছিলেন ১৮৩ রান। শুভমন এদিন হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে সেই কীর্তিও অতিক্রম করে গেলেন। সেটাও ফার্গুসনকে ফাইন লেগ বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দিয়ে। কিন্তু এতেও সবটা বলা হচ্ছে না। পরের দুটো বলে আরও দুটো ছক্কা মেরে সবথেকে কম বয়সে একদিনের ক্রিকেট ডাবল সেঞ্চুরি করে গেলেন শুভমন। যাঁর ২৩ চলছে। এবং যিনি শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করে এসেছেন।
শুভমন যখন ১৪৯ বলে ২০৮ রান করে ফিরে গেলেন, বিরাটকে দেখা গেল নিচে নেমে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন। রোহিত শর্মা সম্ভবত টস জিতে আগে ব্যাট করে নিলেন এটা ভেবে যে, উইকেট পরে আরও স্লো হতে পারে। স্ট্রোক নেওয়া তখন আরও কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু অধিনায়ক নিজে কেন বড় ইনিংস খেলতে পারছেন না? সেট হয়ে উইকেট দিয়ে আসছেন হিটম্যান। এদিন ৩৮ বলে ৩৪ রান করে উইকেট দিয়ে গেলেন টিকনারকে। দলের রান তখন ১২.১ ওভারে ৬০।

উইলিয়ামস, সাউদি ও বোল্টকে ছাড়াই এই সফরে এসেছে নিউজিল্যান্ড। স্যান্টনার, ফার্গুসন, মিচেল ও ব্রেসওয়েল থাকলে কী হবে, কিউই বোলিংকে বেশ কমজোরি দেখাল। না হলে রোহিতের পর বিরাট (৮) আর ঈশান কিসানকে (৫) তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার পরও নিউজিল্যান্ড সেই চাপটা রাখতে পারবে না কেন? ১৯.৪ ওভারে ভারত তখন ১১০/৩। সেখান থেকে রোহিতদের রানটা ৫০ ওভারে দাঁড়াল ৩৪৯/৮।
শ্রেয়স পিঠের চোট নিয়ে এই সিরিজের বাইরে। তাঁর জায়গায় সূর্যকুমার যাদব এসে ২৬ বলে ৩১ রান করে দিয়ে গেলেন। শুভমনের সঙ্গে জুটিতে ৬৫ রানও যোগ করলেন সূর্য। তবে টি-২০ ক্রিকেট যেজন্য সূর্যকে চেনে, সেটা অন্তত বুধবারের ম্যাচে অদৃশ্য ছিল। এরপর হার্দিক শুভমনের সঙ্গে ৭৪ রান জুড়ে দিয়ে গেলেন। তিনি করেছেন ৩৮ বলে ২৮ রান। থার্ড আম্পায়ারের হাতে তাঁর আউট নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু শুভমনের এই ইনিংসের সামনে বাকি সবের তেমন গুরুত্ব নেই।
আরও পড়ুন- রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এসএসকেএম-এ স্পোর্টস মেডিসিন সেন্টার




 
 
 
 
































































































































