গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার বঙ্গ বিজেপি! দিলীপ জমানাই ভালো ছিল, মন্তব্য জাতীয় মুখপাত্রের

0
1

দিলীপ জমানায় বঙ্গে কিছুটা হলেও গোড়ালি ডুবেছিল বিজেপির। যেটুকু সংগঠন তৈরি হয়েছিল সুকান্ত জামানায় তা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। প্রকাশ্যে না বললেও গেরুয়া শিবিরের (BJP) অন্দরে আকছার শোনা যায় একথা। দিলীপ গোষ্ঠী, শুভেন্দু গোষ্ঠী, সুকান্ত গোষ্ঠী এমনই একাধিক গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে বঙ্গে এখন ‘খাবি খাচ্ছে’ গেরুয়া বাহিনী। এহেন পরিস্থিতিতেই এবার দলের অভ্যন্তরে সরব হয়ে উঠলেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র ভারতী ঘোষ (Bharati Ghosh)। শীর্ষ নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আচমকাই বিস্ফোরক মন্তব্য করে ভারতী জানালেন, ‘বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের(Sukanta Majumdar) তুলনায় দিলীপ ঘোষের(Dilip Ghosh) জমানা অনেক ভালো ছিল।’

দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল তো বটেই ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধনের ভিআইপি কার্ড বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন ভারতী। তাঁর অভিযোগ ভিআইপি তালিকায় নাম থাকলেও সেদিন তার মত বহু নেতা-নেত্রী কার্ড পাননি। গোটা ঘটনায় সুকান্ত ও তার নেতৃত্বাধীন কমিটির দিকে আঙুল তোলেন ভারতী ঘোষ। অভিযোগ করেন, গত এক বছরে তার মত বহু নেতা-নেত্রীকে ইচ্ছাকৃতভাবে হেয় করা হয়েছে বর্তমান পরিচালক গোষ্ঠীর দ্বারা। ভিআইপি হিসেবে যাদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল তাদেরকে কার্ড না দিয়ে সাধারণ অনুগামীদের তা বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এরাই অনুষ্ঠানে মঞ্চের সামনে গিয়ে গোটা অনুষ্ঠানের গরিমা নষ্ট করেছে। এই অনুষ্ঠানেই তাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে উদ্দেশ্য করে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়া হয় বিজেপি কর্মীদের তরফে। খোদ মন্ত্রী বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাঁর কথায় কোনো গুরুত্ব দেয়নি বিজেপির অনুগামীরা। whatsapp গ্রুপে এই বিষয়টিকেই তুলে ধরেছেন ভারতী দেবী। এবং তুলোধোনা করেছেন সুকান্ত গোষ্ঠীকে। এই ভিআইপি কার্ড বিলের দায়িত্বে ছিলেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। তাঁকেও তোপ দাগতে ছাড়েননি প্রাক্তন এই আইপিএস আধিকারিক।

একইসঙ্গে দিলীপ জমানার প্রশংসা করে ভারতী ঘোষ লেখেন, দিলীপ ঘোষের সময়কালে এই অনিয়ম হতো না। তাঁর বক্তব্য, যখন দিলীপবাবু সভাপতি ছিলেন, এই ধরনের কার্ড বিলির দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট কয়েকজন নেতার উপর থাকত। তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে ভিভিআইপি কার্ড প্রাপকদের ফোন করতেন। ভারতী ঘোষের এই উপলব্ধি থেকে পরিষ্কার, সুকান্তবাবুর তুলনায় দিলীপ ঘোষের সাংগঠনিক দক্ষতা অনেক বেশি ছিল। এ বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কার্ড বিলি নিয়ে নিশ্চয়ই গণ্ডগোল হয়েছিল। ভারতীদেবীর বিষয়টি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের জানানো উচিত। গোটা ঘটনার তদন্ত প্রয়োজন। বন্দে ভারতের উদ্বোধন একটা সরকারি অনুষ্ঠান, পার্টির কর্মসূচি নয়। যাঁদের নামে কার্ড ইস্যু হয়েছে, তাঁদের বদলে অন্যরা মঞ্চের কাছে কীভাবে পৌঁছে গেল, সেটাও দেখা দরকার।’ এই বিষয়গুলি নিয়ে বর্তমান কমিটিকে ভবিষ্যতে আরও বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি।