বড়সড় ভূবিপর্যয়ের মুখে হিমালয়ের কোলে থাকা এই ছোট জনপদ জোশীমঠ(YoshiMath)। ইতিমধ্যেই এই অঞ্চলের কয়েকশো পরিবার ঘরছাড়া হয়েছেন। বিপর্যয় মোকাবিলায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে(Narendra Modi)। এই গোটা পরিস্থিতির জন্য স্থানীয়রা দুষছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনটিপিসি-কে(NTPC)। এই সংস্থার নির্মিত তপোবন বিষ্ণুগাড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যাপক নিয়ম ভঙ্গের জন্যই আজ এই পরিস্থিতি হয়েছে জোশীমঠের। যদিও সংস্থার দাবি কোনও নিয়মভঙ্গ হয়নি।

সংবাদ সংস্থা ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, তপোবন বিষ্ণুগাড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বার বার নিয়মভঙ্গ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জোশীমঠের অদূরে প্রবল বেগে বয়ে চলা ধৌলিগঙ্গার জলকে টারবাইনে ফেলে ঘোরানোর জন্য জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে খনন করা হয়েছে ১২.১ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গ খুড়তে আনা হয় টানেল বোরিং মেশিন। খননকার্য শুরু হওয়ার পর থেকে একাধিকবার ছোটখাটো বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে ওই অঞ্চলকে। এমনকি এই বোরিং মেশিন ঢোকানোর সময় ভূগর্ভস্থ জলাধার ফেটে যায়। এই ঘটনায় সুড়ঙ্গের ভিতরে থাকা একাধিক শ্রমিকেরও মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকার ভূমি ভারসাম্যে।
উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন এবং গাড়ওয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপকদের মতে, মাটির তলা থেকে জল বেরিয়ে যাওয়ায়, মাটির তলদেশ ফাঁপা হয়ে গিয়েছিল। তারই পরিণতিতে আজকের এই ধস এবং ফাটলের ঘটনা। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের ফলে জোশীমঠের জলস্তর নীচে নেমে যায়। শহরবাসী তীব্র জলকষ্টের সম্মুখীন হন। তাঁদের অভিযোগ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কৃত্রিম বিস্ফোরণ ঘটানোর ফলে মাঝেমধ্যেই কেঁপে উঠত জোশীমঠ। এ নিয়ে তাঁরা ডিসেম্বর মাসে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী এবং জেলাশাসককে চিঠি লিখলেও কোনও উত্তর মেলেনি বলে দাবি তাঁদের। ‘জোশীমঠ বাঁচাও সংঘর্ষ সমিতি’র প্রধান অতুল সতী ‘দি হিন্দু’কে জানিয়েছেন, এনটিপিসির প্রকল্প যে তাঁদের ঘরছাড়া করবে, তা তাঁরা আগেই বুঝেছিলেন। কিন্তু, তাঁদের অভিযোগ সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি বলে দাবি তাঁর। এই পরিস্থিতিতে গত শনিবার জোশীমঠকে বিপর্যয়গ্রস্ত এবং বসবাসের অনুপযোগী বলে ঘোষণা করেছিল উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। একের পর এক বাড়িতে দেখা যাচ্ছে ফাটল। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের।
















 


























































































































