নিউইয়র্কের বেশ কিছু এলাকা ৪৩ ইঞ্চি তুষারের নিচে, মৃত বেড়ে ৫০

0
1

ভয়াবহ তুষারঝড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ এলাকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। শুধু নিউইয়র্কের এরি কাউন্টিতেই মারা গেছেন কমপক্ষে ২৭ জন। গতকাল সোমবার কাউন্টির কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এরি কাউন্টির হালনাগাদ মৃতের সংখ্যায় বাফেলো শহরের মৃতদের তথ্য যোগ করা হয়েছে। পশ্চিম নিউইয়র্কের কয়েকটি এলাকায় ৪৩ ইঞ্চি পর্যন্ত তুষারপাত হয়েছে। এতে সড়কে যানবাহন আটকা পড়েছে। বড়দিনের ছুটির মধ্যে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন হাজারো বাসিন্দা।

এরি কাউন্টির নির্বাহী মার্ক পোলানকারজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এ এক ভয়াবহ পরিস্থিতি।’ তিনি বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল সকাল থেকে আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা নাগাদ আরও ৮ থেকে ১৩ ইঞ্চি তুষারপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।

তিনি বলেন, ‘আমরা সড়ক কটি সচল ও পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি। যেসব এলাকায় এখনো সড়ক পরিষ্কারের কাজ শুরু করা যায়নি, সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’

সোমবার বিকেলে এক টুইটে পোলানকারজ বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, কাউন্টির স্বাস্থ্য বিভাগ তুষারপাতে আরও দুজনের মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মোট মৃতের সংখ্যা এখন ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে।’

এবারের তুষারঝড়কে বাফেলোর ১৯৭৭ সালের ভয়াবহ তুষারঝড়ের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে পোলোনকারজ বলেন, এবারের ঝড়ের ভয়াবহতা সাতাত্তরের তুষারঝড়ের চেয়ে মারাত্মক। ওই তুষারঝড়ে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যাঁদের ২২ জনই ছিলেন এরি কাউন্টির।

এর আগে গত রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুল বলেন, বাফেলোর দীর্ঘ ইতিহাসে এই ঝড় সবচেয়ে বিধ্বংসী। এরি ও জেনেসি কাউন্টিতে কেন্দ্রীয়ভাবে জরুরি অবস্থা জারি করতে গতকাল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

ভয়াবহ তুষারঝড়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে যুদ্ধক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।

হচুল স্থানীয়ভাবে যান চলাচল বন্ধের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলতে আবারও অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এতে কর্মকর্তারা সড়কের তুষার পরিষ্কারের কাজ অব্যাহত রাখতে এবং সড়কে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা বহু গাড়ি সরিয়ে নিতে পারবেন। গভর্নর বলেন, ‘ঘরের বাইরে যাওয়া এখনো ঝুঁকিপূর্ণ।’

পাওয়ারআউটেজ ডট ইউএসের তথ্য অনুযায়ী, তুষারঝড়ের কারণে গতকাল বিকেল নাগাদ সারা দেশে প্রায় ৭৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন। তুষারঝড় শুরু হওয়ার পর থেকে এই সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে সাপ্তাহিক ছুটির ব্যস্ততম সময়ে ভ্রমণে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি করে এই তুষারঝড়। গত শুক্রবার পাঁচ হাজারের বেশি আর শনিবার ৩ হাজার ৪০০টির বেশি উড়োজাহাজ ফ্লাইট বাতিল করা হয়। বড়দিনে ৩ হাজার ১০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় পূর্বাঞ্চলীয় সময় গতকাল বিকেল ৪টা নাগাদ ৩ হাজার ৭০০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে ফ্লাইটঅ্যাওয়ার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।