ওড়িশায় রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল রাশিয়ার এক আইনপ্রণেতার। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের তীব্র সমালোচক হিসেবে পরিচিত এই আইনপ্রণেতার নাম পাভেল আন্তভ। ওড়িশার একটি হোটেলে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। হোটেল থেকে পড়ে গিয়ে পাভেলের মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। তবে কীভাবে হোটেল থেকে তিনি পড়ে গেলেন, সেই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। জানা গিয়েছে, নিজের ৬৬তম জন্মদিন উপলক্ষে ওড়িশার রায়গড় অঞ্চলে ছুটিতে কাটাতে এসেছিলেন পাভেল। সেখানকারই এক হোটেল থেকে পড়ে গিয়ে এই মর্মান্তিক পরিণতি হল তাঁর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার ৪ জনের একটি দল ওড়িশার ওই হোটেলে এসেছিল। পর্যটকদের মধ্যে সকলেই ছিলেন রাশিয়ান। এই দলটির সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় ট্যুর গাইড জিতেন্দ্র সিংহ। পাভেলের মৃত্যু নিয়ে এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, পাভেলের মৃত্যুর ক্ষেত্রে আত্মহত্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। তবে তদন্তের ক্ষেত্রে হোটেলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাটির কথাও মাথায় রাখা হচ্ছে।
ওই পুলিশ আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, বন্ধুর মৃত্যুর পর অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন পাভেল। তাই পাভেলের মৃত্যুর তদন্তে সম্ভাব্য সব দিকই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাভেলদের সঙ্গে আসা আরও দুই পর্যটককে হোটেলে আরও কয়েকদিন থেকে যাওয়ার জন্য এবং তদন্তে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কলকাতায় নিযুক্ত রাশিয়ার কনসাল জেনারেল অ্যালেক্সি ইদামকিন রুশ সংবাদসংস্থা TASS-কে বলেছেন যে পাভেল জানালা থেকে ‘পড়ে গিয়েছেন’। তাঁর আরও দাবি, পুলিশ এই মৃত্যুর নেপথ্যে কোনও অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পায়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্তের গতিবিধি খুব কাছ থেকে অনুসরণ করছি এবং ওড়িশা পুলিশের কাছ থেকে সমস্ত তথ্য পাচ্ছি।’ তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে আঞ্চলিক সংসদের ভাইস স্পিকার ব্যাচেস্লাভ কার্তুখিন নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী, একজন সফল উদ্যোক্তা, জনহিতৈষী পাভেল আন্তভ মারা গিয়েছেন। ইউনাইটেড রাশিয়া ফ্যাকশনের ডেপুটিদের পক্ষ থেকে আমি তাঁর আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’
এদিকে পাভেলের মৃত্যুর দুই দিন আগেই তাঁর দলের আরও এক সদস্যেরও রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়। ৬১ বছর বয়সি ভ্লাদিমির বুদানভের মৃত্যু হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। দাবি করা হয়, বুদনভ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান। প্রসঙ্গত, পাভেল এবং তাঁর দল পুতিন বিরোধী হিসেবে পরিচিত। এমনকী ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতায় সম্প্রতি একটি ব্লগও লিখেছিলেন পাভেল। যদিও পড়ে চাপের মুখে পড়ে তিনি তাঁর ব্লগ সরিয়ে দেন এবং অবস্থান বদলের ঘোষণা করেন। তিনি ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছিলেন সেই পোস্টের জন্য।